ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর গাজার একটি স্কুলে বোমা হামলার ফলে কমপক্ষে ২৮ জন বাস্তুচ্যুত ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। প্যারামেডিকরা এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এই হামলা এমন একটি সময়ে ঘটেছে যখন গাজায় ইতিমধ্যেই হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং বহু স্কুলে আশ্রয় নিয়েছে। এসব স্থাপনা সাধারণত জাতিসংঘের আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এই ঘটনার ফলে নিহতদের সংখ্যা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক এবং আন্তর্জাতিক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

অদ্ভুত’ মামলায় আইফোন নির্মাতা কর্মীদের আটক করেছে চীন

গাজায় ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে চলমান সংঘাতের ফলে পুরো অঞ্চলজুড়ে মানবিক বিপর্যয় নেমে এসেছে। গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের বিমান হামলা ও হামাসের রকেট হামলা চলছে কয়েক সপ্তাহ ধরে। ফলে গাজার হাজার হাজার বাসিন্দা তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ৬০ শতাংশ জনসংখ্যা বর্তমানে বাস্তুচ্যুত এবং এদের মধ্যে অনেকেই স্কুল ও অন্যান্য স্থাপনায় আশ্রয় নিয়েছে।

এদিকে, ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে যে তারা হামাসের যোদ্ধাদের লক্ষ্যবস্তু করে হামলা চালাচ্ছে এবং এই অঞ্চলে হামাসের সামরিক স্থাপনা ধ্বংস করছে। ইসরায়েলি বাহিনী এ ধরনের হামলাকে প্রতিরোধমূলক হিসেবে বর্ণনা করছে এবং দাবি করছে যে তারা বেসামরিক ক্ষয়ক্ষতি কমানোর চেষ্টা করছে।

স্কুলটিতে আশ্রয় নেওয়া ব্যক্তি ছিলেন মূলত গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে আসা পরিবার, যারা ইসরায়েলের অব্যাহত বিমান হামলার কারণে বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছিল। প্যারামেডিকরা জানিয়েছেন যে নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুরাও রয়েছে। আহতদের মধ্যে অনেকেই গুরুতর অবস্থায় রয়েছে, এবং স্থানীয় হাসপাতালগুলিতে তাদের চিকিৎসা চলছে।

ইলন মাস্ক টেসলা রোবোট্যাক্সি ইভেন্টে সাইবারক্যাব উন্মোচন করেছেন

এই ঘটনার পর আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো ইসরায়েলকে বেসামরিক স্থাপনায় হামলার জন্য কঠোর সমালোচনা করেছে। তারা এই ধরনের হামলাকে যুদ্ধাপরাধের সাথে তুলনা করছে এবং একটি স্বাধীন তদন্তের দাবি করেছে।

জাতিসংঘের মহাসচিব এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, “এ ধরনের হামলা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘন করছে এবং অবিলম্বে বন্ধ হওয়া উচিত।” মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকেও শান্তির আহ্বান জানানো হয়েছে, কিন্তু ইসরায়েল তার অভিযান অব্যাহত রাখার সংকল্প প্রকাশ করেছে।

ইসরায়েলি সরকার বলছে, তারা হামাসের সামরিক অবস্থানগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করছে এবং হামাসের রকেট নিক্ষেপ বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তাদের অভিযান চালিয়ে যাবে। ইসরায়েলের সামরিক মুখপাত্র আরও দাবি করেছেন যে হামাস তাদের অস্ত্র এবং সামরিক সরঞ্জাম লুকাতে স্কুল, হাসপাতাল এবং মসজিদগুলোকে ব্যবহার করছে।

নেতানিয়াহু বলেছেন অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার জন্য ম্যাক্রোঁর আহ্বান ‘একটি অসম্মানজনক’

গাজায় বর্তমানে বিদ্যুৎ, পানি এবং খাদ্য সরবরাহ সংকট চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে, হাসপাতালগুলো আহতদের চিকিৎসা করতে হিমশিম খাচ্ছে। জাতিসংঘ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো জরুরি সহায়তা পাঠানোর চেষ্টা করছে, তবে সংঘাত চলমান থাকায় এ ধরনের সহায়তা পৌঁছানো অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে।

গাজা দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েলি অবরোধের অধীনে রয়েছে, এবং এই অবরোধের কারণে সেখানে খাদ্য, ঔষধ, এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর সংকট প্রতিদিনই বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইসরায়েলি সরকার দাবি করেছে যে এই অবরোধ হামাসের ওপর চাপ সৃষ্টি করার জন্য এবং তাদের সামরিক কার্যক্রম বন্ধ করার জন্য প্রয়োজনীয়, কিন্তু মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে যে এর ফলে সাধারণ মানুষের জীবন চরম বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছে।

হোয়াইট হাউসের সাংবাদিকরা বিডেনকে চাপ দেওয়ার সুযোগে হারিকেন হেলিন নিয়ে শূন্য প্রশ্ন করলেন

বর্তমান সংঘাতকে বন্ধ করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও, শান্তি আলোচনা কোন সাফল্য অর্জন করতে পারেনি। মিসর এবং কাতার মতো দেশগুলো সংঘাত নিরসনে মধ্যস্থতার চেষ্টা করছে, কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি।

গাজা এবং ইসরায়েলের মধ্যে সংঘাত বন্ধে দীর্ঘমেয়াদী সমাধানের জন্য জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোর আরও দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। শান্তি প্রতিষ্ঠা ছাড়া এই অঞ্চলের জনগণের জন্য একটি নিরাপদ ও স্থিতিশীল ভবিষ্যৎ কল্পনা করা প্রায় অসম্ভব।

‘আমাকে ধর্ষণ করো, আমার মেয়েদের নয়’ – সুদানের ভয়াবহ যুদ্ধ।

গাজার স্কুলে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলার ফলে ২৮ জন বাস্তুচ্যুত মানুষের প্রাণহানি নতুন করে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের ওপর আলো ফেলেছে। এই ঘটনা যুদ্ধাপরাধের প্রশ্ন উত্থাপন করেছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কঠোর প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। তবে এই মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি হলো মানবিক সহায়তা প্রদান এবং সংঘাত বন্ধ করার জন্য সব পক্ষের মধ্যে আলোচনা শুরু করা।

shoberkotha

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version