ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্তে অবৈধভাবে ভারতে পালানোর চেষ্টাকালে আটক হন সাবেক ভূমিমন্ত্রী এবং খুলনা-৫ আসনের প্রাক্তন সংসদ সদস্য নারায়ন চন্দ্র চন্দ। রবিবার রাতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) তাকে গ্রেপ্তার করে এবং সোমবার তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। বিজিবির অভিযানের সময় আরও তিনজনকে আটক করা হয়েছে, যাদের মধ্যে একজন ভারতীয় নাগরিকও ছিলেন। বিনা পাসপোর্টে সীমান্ত অতিক্রমের চেষ্টার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

রবিবার রাতে মহেশপুর সীমান্তের ৬১ নং পিলারের কাছে থেকে নারায়ন চন্দ্র চন্দসহ চারজনকে আটক করে বিজিবি। তাদের আটক করার সময় তারা বিনা পাসপোর্টে ভারত প্রবেশের চেষ্টা করছিল বলে জানা যায়। আটককৃতদের মধ্যে ছিলেন খুলনা তেরোখাদার সবুজ গাইন, যশোর ঝিকরগাছার মো. রাজ্জাক, এবং ভারতের মুম্বাইয়ের নাগরিক মেহেরুন শেখ। বিজিবি’র গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, সাবেক ভূমিমন্ত্রী পরিচয় গোপন করে ভারত পালানোর চেষ্টা করছিলেন। বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্ণেল শাহ মো. আজিজুস শহীদ বলেন, সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে তারা অভিযান পরিচালনা করেন এবং অভিযুক্তদের আটক করেন।

ঝিনাইদহে মুরগীর দোকান দখল করে নিলো বিএনপির সমর্থকরা

আটক করার পর বিজিবি তাদের বিরুদ্ধে বিনা পাসপোর্টে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের চেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের করে। মহেশপুর থানায় এই মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং এরপর তাদের আদালতে সোপর্দ করা হয়। মহেশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাব্বুর রহমান কাজল বলেন, সাবেক ভূমিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আরও একটি গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। তিনি জানান, নারায়ন চন্দ্র চন্দের বিরুদ্ধে ঢাকার পল্টন থানায় একটি হত্যা মামলা রয়েছে। এই মামলার সাথে তার পালানোর চেষ্টার কোনো সম্পর্ক আছে কি না, তা নিয়ে তদন্ত চলছে।

নারায়ন চন্দ্র চন্দ একজন প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তি এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একজন নেতা হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় ছিলেন। তিনি শেখ হাসিনা সরকারের সময় ভূমিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন এবং খুলনা-৫ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। তার বিরুদ্ধে ওঠা এ ধরনের গুরুতর অভিযোগ শুধু তাকে নয়, পুরো রাজনৈতিক অঙ্গনকে নাড়া দিয়েছে।

সাবেক ভুমি মন্ত্রী ভারতে পালানোর সময় মহেশপুর সীমান্ত থেকে বিজিবি আটক করে

বাংলাদেশের মহেশপুর সীমান্ত এলাকা দীর্ঘদিন ধরে সংবেদনশীল হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। এখান দিয়ে অনেকে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করেন, যা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রায়শই সতর্ক থাকতে বাধ্য করে। বিজিবির এই অভিযানে আবারও প্রমাণিত হয়েছে যে, সীমান্তপথে অবৈধ প্রবেশের ঘটনা এখনও একটি বড় সমস্যা। সীমান্ত এলাকায় আইন-শৃঙ্খলার বিষয়টি আরও কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন, যাতে এ ধরনের অবৈধ প্রবেশ বন্ধ করা যায়।

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই অবাক হয়েছেন যে, একজন সাবেক মন্ত্রী কেন এভাবে দেশ ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করবেন। স্থানীয় জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি এবং উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। অনেকেই মনে করছেন যে, এ ঘটনা রাজনৈতিক প্রভাব বা আইনি সমস্যার সাথে সম্পর্কিত হতে পারে।

প্রানবন্ত ও কোলাহল মুখর পানি উন্নয়ন বোর্ড এখন অস্তিত্ব রক্ষায় ধুকছে আওয়ামীলীগ নেতাদের মারধর ও টেন্ডারবাজীতে স্থবির ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ড

সোমবার বিকেলে মহেশপুর আদালতে সোপর্দ করার পর বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আদালত তাদের জামিন দেয় কি না, সেটি এখনো অনিশ্চিত। নারায়ন চন্দ্র চন্দের বিরুদ্ধে ঢাকা পল্টন থানায় হত্যাকাণ্ডের মামলা থাকায় আদালতের রায় তার বিরুদ্ধে কীভাবে প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে আইনি বিশেষজ্ঞরা মতামত প্রদান করছেন।

সাবেক ভূমিমন্ত্রীর আটক হওয়ার ঘটনায় রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপি এবং অন্যান্য বিরোধী দলগুলো এই ঘটনাকে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের দুর্নীতির একটি উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করছে। তারা বলছে, সরকারের নেতারা নিজেদের দুর্নীতি ঢাকতে এবং আইনি ব্যবস্থা থেকে বাঁচতে এ ধরনের কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হচ্ছেন। অন্যদিকে, আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এখনো এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। তবে দলটির কিছু নেতারা বিষয়টি তদন্তের জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে ওয়াইফাই রাউটারগুলি সাইবার আক্রমণের ঝুঁকিতে রয়েছে

বিজিবির এই অভিযান আবারও প্রমাণ করেছে যে, সীমান্তে নিরাপত্তা রক্ষার বিষয়ে তারা সজাগ রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা যেভাবে সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে সাবেক মন্ত্রীসহ অন্যদের আটক করেছে, তা প্রশংসিত হচ্ছে। তাদের এই পদক্ষেপের ফলে সীমান্ত এলাকা আরও সুরক্ষিত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত অত্যন্ত জরুরি, যাতে প্রকৃত কারণ এবং উদ্দেশ্য উদঘাটন করা যায়। যদি নারায়ন চন্দ্র চন্দ সত্যিই আইন ভঙ্গ করে দেশ ছাড়ার চেষ্টা করে থাকেন, তবে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। এ ধরনের ঘটনা ভবিষ্যতে যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সে জন্য সরকারকে আরও সতর্ক হতে হবে এবং সীমান্ত নিরাপত্তা আরও জোরদার করতে হবে।

কালীগঞ্জে বিজেপির মোটরসাইকেল র‍্যালি ও লিফলেট বিতরণ

সাবেক ভূমিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দের আটক হওয়ার ঘটনা বাংলাদেশে রাজনৈতিক অঙ্গনে এবং সাধারণ জনগণের মধ্যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। তার বিরুদ্ধে আইনগত প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে এবং বিচারিক তদন্ত চলছে। এই ঘটনার মাধ্যমে আবারও প্রমাণিত হয়েছে যে, দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং সীমান্তরক্ষী বাহিনী তাদের দায়িত্ব পালন করতে সতর্ক রয়েছে।

shoberkotha

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version