ঝিনাইদহ প্রতিনিধি—স্বাধীন বাংলাদেশে জনগণের সেবা পাওয়ার প্রত্যাশা থাকলেও ঝিনাইদহ পৌরসভায় এখনও ফ্যাসিবাদের দোষররা চাকরিতে বহাল থাকায় কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ জনগণ। পৌরসভায় এখনও ঘুষ, দুর্নীতি, এবং নাগরিকদের হয়রানি চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘুষ ছাড়া বিভিন্ন সেবা পাওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে বলে দাবি করেছেন স্থানীয় নাগরিকরা।

হরিণাকুণ্ডুতে সাপের কামড়ে এক যুবকের মৃত্যু

তথ্য অনুযায়ী, ঝিনাইদহ পৌরসভায় চেক জালিয়াতির মামলায় অভিযুক্ত চাঁদ আলীসহ আরও কয়েকজন কর্মকর্তা এখনো বহাল তবিয়তে চাকরি করছেন। জনগণের অভিযোগ, আগের মতই পৌরসভার বিভিন্ন সেবা নিতে হলে ঘুষ দিতে হয়। বিশেষ করে লাইসেন্স, কর প্রদান এবং অন্যান্য সেবা নেয়ার ক্ষেত্রে বেশি হয়রানির শিকার হতে হয় সাধারণ মানুষকে।

ঝিনাইদহে ভার্চুয়ালি সমাবেশে তারেক রহমান: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের রোডম্যাপ নির্দিষ্ট করতে হবে

স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, স্বাধীনতার পরেও স্বৈরাচারী সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা পৌরসভার গুরুত্বপূর্ণ পদে আছেন। ফলে পৌরসভার উন্নয়ন প্রকল্পগুলি সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে না। রাস্তা-ঘাটের বেহাল দশা, ড্রেনেজ সিস্টেমের খারাপ অবস্থা, এবং মশার উৎপাত নিয়ে স্থানীয়দের ক্ষোভ চরমে পৌঁছেছে। মশা নিধনের জন্য বাজেট বরাদ্দ থাকা সত্ত্বেও কার্যত কোন মশক নিধন কার্যক্রম নেই। এছাড়া সড়ক বাতি কেনার জন্য বরাদ্দকৃত অর্থেরও দুর্নীতি হয়েছে বলে দাবি করছেন অনেকেই।

মহেশপুরের স্বরূপপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিস যেন মগের মুল্লুক: ঘুষ ছাড়া সেবা মেলে না

নাগরিকদের মধ্যে এক অংশ দাবি করেন, ঝিনাইদহ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ কামাল উদ্দীন দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে অযোগ্য মেয়রের সঙ্গে যোগসাজশে কোটি কোটি টাকার সরকারি বরাদ্দের অপব্যবহার করেছেন। রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণে অবহেলা ও দুর্নীতি করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এক নাগরিক আনারুজ্জামান আজাদ কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে স্থানীয় সরকার বিভাগে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অভিযোগ অনুযায়ী, প্রকৌশলী কামাল হোসেন গত ১৮ বছর ধরে পৌরসভার উন্নয়ন প্রকল্পগুলিতে কোনো উল্লেখযোগ্য কাজ করেননি। একটু বৃষ্টি হলেই শহরের রাস্তায় পানি জমে থাকে। পৌরসভার বাজার এলাকার সড়কগুলিরও অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন যে, মশার জন্য বরাদ্দকৃত অর্থও ঠিকভাবে ব্যবহার হয়নি, এবং রাস্তার বাতিগুলির বেশিরভাগই নষ্ট হয়ে আছে।

ভারতে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা:) ও ইসলাম সম্পর্কে কটুক্তির প্রতিবাদে ঝিনাইদহে বিক্ষোভ ও সমাবেশ

প্রকৌশলী কামাল হোসেন অবশ্য তার বিরুদ্ধে ওঠা সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “সব কাজ নিয়ম মেনেই করা হয়, আর কাজের নির্দেশ দেয় পৌর কর্তৃপক্ষ। আমাদের কিছুই করার নেই।” পৌরসভার প্রশাসক রথীন্দ্রনাথ রায় জানান, “আগে কী হয়েছে তা বলতে পারব না, তবে এখন পৌরসভার প্রশাসক নিয়োগের পর থেকে কোন প্রকার অনিয়ম করার সুযোগ নেই।”

ঝিনাইদহে জমি দখল ও গাছ কাটায় ভূমি বিরোধ ও আইনি পদক্ষেপের টানাপোড়েন

ঝিনাইদহের পৌরসভার সেবা খাতে চলমান দুর্নীতি এবং অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে স্থানীয় জনগণের ক্ষোভ ক্রমেই বাড়ছে। সহকারী শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি এবং পৌরসভার দুর্নীতি নিয়ে জনগণের অভিযোগ স্থানীয় প্রশাসন এবং সরকারের প্রতি চাপ সৃষ্টি করছে। সঠিক পদক্ষেপের অভাবে জনগণের আস্থা হারাচ্ছে পৌরসভা, যা নাগরিক সেবা ও উন্নয়ন প্রকল্পের সুষ্ঠু বাস্তবায়নে বিরাট অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

shoberkotha

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version