বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মধ্যে ঘনিষ্ঠ অংশীদারিত্বের পুনর্ব্যক্ত হয়েছে। ২৪ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে উভয়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই বৈঠকে প্রেসিডেন্ট বাইডেন অধ্যাপক ইউনূসকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের জন্য অভিনন্দন জানান।

বৈঠকে উভয় নেতা যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব এবং অংশীদারিত্বের ওপর জোর দেন। তারা বলেন, এই অংশীদারিত্ব অভিন্ন গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং উভয় দেশের জনগণের মধ্যে শক্তিশালী বন্ধনের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে।

ট্রাম্প শোনেন কিন্তু মার্কিন অর্থনীতিতে চীনের প্রভাব সম্পর্কে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নীরব থাকেন

প্রেসিডেন্ট বাইডেন বাংলাদেশে নতুন সংস্কার এজেন্ডা বাস্তবায়নের সময় যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত সমর্থন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার প্রয়াসে দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানোর গুরুত্বও উল্লেখ করেন। বাইডেন বলেন, “বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে আরও গভীর সম্পর্ক গড়ে তুলতে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।”

অধ্যাপক ইউনূস, যিনি গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা এবং নোবেল বিজয়ী, বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং দারিদ্র্য বিমোচনে বাংলাদেশের অবদানের কথা তুলে ধরেন। তিনি বাংলাদেশে সামাজিক ব্যবসা মডেলের সফলতা এবং এর মাধ্যমে দেশে অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রভাব ব্যাখ্যা করেন।

ট্রাম্প ও ভ্যান্স বনাম হ্যারিস ও ওয়ালজ: মিডিয়া সাক্ষাৎকারের দৌড়

প্রেসিডেন্ট বাইডেন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং দারিদ্র্য বিমোচনে অধ্যাপক ইউনূসের কাজের প্রশংসা করেন। উভয় নেতা বিশ্বাস করেন, বাংলাদেশের সাথে এই সম্পর্ক আরো জোরালো করতে উভয় পক্ষ থেকেই কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক, এবং উন্নয়নমূলক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা প্রয়োজন।

এছাড়াও, অধ্যাপক ইউনূস একই দিনে ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রেসিডেন্ট ক্রিস্তালিনা জর্জিভা এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের সাথেও সাক্ষাৎ করেন।

মার্কিন নির্বাচনে বিদেশী প্রভাব এবং এআই ব্যবহারের হুমকি

এই বৈঠকগুলোতে অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের উন্নয়ন পরিকল্পনা এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার উপর জোর দেন। তিনি বিশ্ব নেতাদের কাছে বাংলাদেশের অগ্রগতির বার্তা পৌঁছে দেন এবং বৈশ্বিক অর্থনীতিতে বাংলাদেশের সম্ভাবনা সম্পর্কে আলোচনা করেন।

আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে অধ্যাপক ইউনূসের ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে। এতে তিনি বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকারের গৃহীত নীতিমালা এবং দারিদ্র্য, পরিবেশ সুরক্ষা, এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য সরকারের পরিকল্পনা তুলে ধরবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

গ্রীক দ্বীপে অভিবাসী জাহাজ ডুবিতে অন্তত চারজনের মৃত্যু

এটি অধ্যাপক ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে প্রথম আন্তর্জাতিক সফর, যা বাংলাদেশের বৈশ্বিক অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করতে সহায়ক হবে। তাঁর এই ভাষণ আন্তর্জাতিক শান্তি, সুরক্ষা এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি এবং দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরবে।

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নিউইয়র্ক সফর মূলত জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে অংশগ্রহণ এবং বৈশ্বিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি মোকাবিলা করা, বৈশ্বিক সমৃদ্ধির উন্নতি, এবং মানবাধিকার রক্ষার বিষয়ে আলোচনা করার জন্য। তিনি বৈঠকে বিশ্বনেতাদের সাথে আন্তর্জাতিক চ্যালেঞ্জ ও সমাধান নিয়ে মতবিনিময় করেছেন।

ট্রাম্প শোনেন কিন্তু মার্কিন অর্থনীতিতে চীনের প্রভাব সম্পর্কে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নীরব থাকেন

বাইডেন প্রশাসন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে শান্তি ও নিরাপত্তা স্থাপনে বিশেষ ভূমিকা রাখতে চায়। তাঁর এই সফরে জলবায়ু পরিবর্তন, স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং বৈশ্বিক দারিদ্র্য বিমোচনের মতো বিষয়গুলোতে বিশেষ আলোচনা হয়েছে। বাইডেন জোর দিয়েছেন যে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ছাড়া বিশ্বব্যাপী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব নয়।

এই বৈঠক এবং আলোচনাগুলোর মাধ্যমে স্পষ্ট যে, যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও গভীর এবং বহুমুখী হতে যাচ্ছে। উভয় দেশই পরস্পরের সাথে কৌশলগতভাবে কাজ করতে আগ্রহী এবং নতুন প্রকল্প ও নীতিমালার মাধ্যমে সম্পর্ক আরও জোরদার করার পরিকল্পনা করেছে।

অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে কৌশলগতভাবে কাজ করে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারা বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর।

shoberkotha

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version