১৯৯০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ পরিষদে একটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, যেখানে জাতীয় ছাত্রসমাজ এবং ইসলামী ছাত্রশিবিরকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। সে সময়কার ছাত্রসংগঠনগুলোর মধ্যে ঐকমত্যের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছিল, কারণ শিবিরের সহিংস তৎপরতা এবং জাতীয় ছাত্রসমাজের স্বৈরাচারী সরকারের সহযোগিতার কারণে তাদের ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত করা হয়েছিল।

মহেশপুর সীমান্ত থেকে ৩ রোহিঙ্গাসহ ১০ জন আটক

শিবিরের নতুন নেতা সাদিক কায়েম তার পরিচয় প্রকাশের পর, ছাত্রসংগঠনগুলোর নেতারা শিবিরের ক্যাম্পাসে রাজনীতির বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। অনেকেই সাদিকের রাজনৈতিক পরিচয় আগে জানতেন না বলে দাবি করেছেন এবং তাদের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে বিস্ময় দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে, বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলো এবং ছাত্র ইউনিয়ন শিবিরের উপস্থিতি নিয়ে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

ঝিনাইদহের রাজস্ব খাত থেকে বেতন ভাতা প্রদানের দাবীতে ইউনিয়ন ডিজিটাল

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ প্রশাসনের সঙ্গে শিবিরের নেতাদের বৈঠকের বিষয়টি অন্যান্য ছাত্রসংগঠনগুলোর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। তারা উপাচার্যের প্রতি প্রশ্ন তুলেছেন যে, কীভাবে শিবিরের প্রতিনিধিরা সরাসরি প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নিতে পেরেছে। প্রশাসন এ বিষয়ে এখনও কোনো স্পষ্ট ব্যাখ্যা দেয়নি। এ ছাড়া, শিবির ক্যাম্পাসে গোপনে কোনো কার্যক্রম পরিচালনা করছে কিনা, তা নিয়েও নানা প্রশ্ন উঠেছে।

সাদিক কায়েম তার বক্তব্যে বলেছেন, শিবির মেধাভিত্তিক রাজনীতি চায় এবং সব ছাত্রসংগঠনের মতপ্রকাশের স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তিনি প্রশাসনের কাছে ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের পরিবর্তে সংস্কারের দাবি জানান এবং অবিলম্বে ছাত্র সংসদ নির্বাচন আয়োজনের আহ্বান জানান। শিবিরের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে যে, তারা এখন প্রকাশ্যে রাজনীতি করতে চায় এবং সব ছাত্রসংগঠনকে নিয়ে সংলাপের আয়োজন করতে চায়।

ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্তে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করার সময় ৩ রোহিঙ্গা নারীসহ মোট ১৭ জনকে আটক

ছাত্রলীগ, ছাত্রদল এবং বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলো শিবিরের এই আচরণে উদ্বিগ্ন। তারা মনে করছেন, শিবিরের প্রকাশ্য রাজনীতি ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা এবং শিক্ষার পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। তবে অনেক সংগঠনই এখনই প্রকাশ্যে এই বিষয়ে কথা বলতে আগ্রহী নয়। বিশেষ করে, ছাত্রদল মনে করছে, শিবিরকে প্রথমে মুক্তিযুদ্ধের বিষয়ে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে। এরপর ক্যাম্পাসের অন্যান্য ছাত্রসংগঠন এবং অংশীজন মিলে শিবিরের প্রকাশ্য রাজনীতি বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

ঝিনাইদহে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারে নিয়োগপ্রাপ্ত পরিচালকদের সংবাদ সম্মেলন

বর্তমান পরিস্থিতিতে দেখা যাচ্ছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের প্রকাশ্য রাজনীতির কারণে নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ তৈরি হতে যাচ্ছে। দীর্ঘ ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে শিবির গোপনে রাজনীতি পরিচালনা করলেও এবার তাদের প্রকাশ্য উপস্থিতি অন্যান্য ছাত্রসংগঠন এবং প্রশাসনের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হতে পারে। ছাত্ররাজনীতি, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিয়ে ছাত্রসংগঠনগুলো এবং প্রশাসনের মধ্যে একটি নতুন সংলাপের প্রয়োজন হতে পারে।

এই ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এবং ছাত্ররাজনীতির ভবিষ্যৎ নির্দেশ করতে পারে, যেখানে বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন এবং প্রশাসনকে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক পরিবেশকে স্থিতিশীল রাখতে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।

shoberkotha

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version