ঢাকা মেট্রোরেলের ভাড়া নিয়ে সম্প্রতি আলোচনা শুরু হয়েছে, বিশেষ করে তা যখন কলকাতা ও লাহোরের মতো অন্যান্য শহরের মেট্রোরেল ভাড়ার সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে। ঢাকার মেট্রোরেল ভাড়া কলকাতার চেয়ে তিন গুণ এবং লাহোরের চেয়ে দ্বিগুণ বেশি, যা জনমনে কিছু প্রশ্নের সৃষ্টি করেছে। ভাড়ার এই ব্যবধান যৌক্তিক কিনা তা বোঝার জন্য কয়েকটি বিষয় বিবেচনা করা দরকার:

ঢাকা মেট্রোরেল প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বড় অঙ্কের বিনিয়োগ করা হয়েছে। এর নির্মাণ, প্রযুক্তি এবং ব্যবস্থাপনা খরচ তুলনামূলকভাবে বেশি। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে এমন প্রকল্পের জন্য ঋণ নেওয়া হয়েছে, যার কারণে ভাড়ার ক্ষেত্রে উচ্চ হার ধরে রাখতে হয়েছে যাতে সেই ঋণ শোধ করা যায় এবং প্রকল্পটি পরিচালনাগতভাবে লাভজনক হতে পারে।

 

মেট্রোরেলের ট্রেন, স্টেশন এবং অবকাঠামোর রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালন খরচ অনেক বেশি। এই খরচ কাভার করার জন্য ভাড়া তুলনামূলকভাবে বেশি রাখা হয়। কলকাতা এবং লাহোরে সরকারি ভর্তুকির কারণে ভাড়া তুলনামূলকভাবে কম রাখা হয়, যা ঢাকায় সম্ভব হয়নি।

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে কৃষকদের মাঝে মাসকলাই ও পেঁয়াজ বীজ বিতরণ

কলকাতা ও লাহোরের তুলনায় ঢাকার মেট্রোরেল আরও বেশি প্রযুক্তিনির্ভর এবং আধুনিক সুযোগ-সুবিধা যুক্ত করা হয়েছে, যা নির্মাণ খরচ বাড়িয়ে দিয়েছে। এছাড়া, ঢাকা মেট্রোরেল ব্যবহারে যাত্রীদের আর্থিক সক্ষমতা এবং ক্রয়ক্ষমতা, মূল্যস্ফীতি এবং নগরীর মোট আয়ের হারও বিবেচনায় নিতে হবে।

কলকাতা এবং লাহোরে মেট্রোরেলের ক্ষেত্রে সরকারি ভর্তুকি দেওয়া হয়, যার ফলে তাদের ভাড়া কম রাখা সম্ভব হয়। ঢাকা মেট্রোরেল ভাড়া নির্ধারণের ক্ষেত্রে তেমন ভর্তুকি দেওয়া হয়নি, ফলে ভাড়া বেশি রাখা হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে পর্যাপ্ত সহায়তা না থাকায়, ভাড়া জনগণের ওপরই চাপানো হয়েছে।

ঢাকা মহানগরীর বাজারসমূহের পাইকারী ও খুচরা বাজারদর

কলকাতা ও লাহোরের মেট্রোরেল নেটওয়ার্ক পুরোনো এবং সেগুলোতে প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক যাত্রী পরিবহন করা হয়। ঢাকার মেট্রোরেল এখনও তার পূর্ণ ক্ষমতায় যাত্রী পরিবহন শুরু করেনি, ফলে ভাড়া কমানোর বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তবে সময়ের সাথে সাথে যাত্রী সংখ্যা বাড়লে ভাড়া পুনর্বিবেচনা করা হতে পারে।

উচ্চ ভাড়া ঢাকার নিম্ন এবং মধ্যবিত্ত মানুষের জন্য একটি চাপ হতে পারে, যা গণপরিবহন ব্যবস্থার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। যাতায়াতে আরামদায়ক হলেও, বেশি ভাড়ার কারণে অনেকেই মেট্রোরেলের পরিবর্তে অন্য গণপরিবহন ব্যবস্থার দিকে ঝুঁকতে পারে।

দাম কমল জ্বালানি তেলের, আজ রাত ১২টা থেকে কার্যকর

যদি মেট্রোরেলের ব্যবহারে লোকসংখ্যা বাড়ে এবং এটি লাভজনকভাবে পরিচালিত হয়, তবে ভাড়া কমানোর জন্য কর্তৃপক্ষ নীতিমালা গ্রহণ করতে পারে। এছাড়া, সরকারি ভর্তুকি বা অন্যান্য ফান্ডিং অপশন নিয়ে আলোচনা হতে পারে।

ঢাকা মেট্রোরেলের ভাড়া বর্তমান প্রেক্ষাপটে কলকাতা ও লাহোরের তুলনায় বেশি হলেও, এর পেছনে থাকা বাস্তবতা ও খরচের হিসাব বিবেচনায় যৌক্তিকতা রয়েছে। তবে, ভাড়া কমানোর জন্য সরকারের পক্ষ থেকে যথাযথ ব্যবস্থা এবং সহায়তা প্রয়োজন, যাতে এটি সর্বস্তরের জনগণের জন্য আরও গ্রহণযোগ্য হয়।

shoberkotha

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version