সিলেটের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলো ভারতীয় চিনি চোরাচালানের নিরাপদ রুটে পরিণত হয়েছে, যেখানে ছাত্রলীগের শীর্ষ ৪ নেতা মূল ভূমিকা পালন করেছেন। সীমান্তের শতাধিক পয়েন্ট দিয়ে চিনির অবৈধ প্রবাহ বাংলাদেশে ঢুকে, এবং সিলেট হয়ে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। এই চক্রের মূল হোতা ছিলেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজ, মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নাঈম আহমদ, এবং সিলেট সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রুহেল আহমদ। তারা চিনি চোরাচালান সমন্বয় করে তা নিরাপদে দেশের বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছানোর দায়িত্ব পালন করতেন।

চোরাকারবারিদের দেওয়া তথ্যমতে, সীমান্ত এলাকার কমপক্ষে এক হাজার লোক এই চোরাচালানে সম্পৃক্ত ছিল। এই ছাত্রলীগ নেতারা তাদের অনুসারীদের মাধ্যমে চিনি বহনকারী ট্রাকের আগে-পিছে পাহারা বসিয়ে নিরাপদে চিনি পাচার করাতেন। প্রতিদিন গড়ে ১০০ থেকে ১৫০ ট্রাক চিনি সিলেটে ঢুকত, যা বিভিন্ন বাজারে বিতরণ করা হতো। এই কার্যক্রম থেকে তারা প্রতিমাসে বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করতেন।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর, ছাত্রলীগের এই নেতারা আত্মগোপনে চলে যান, এবং চিনি চোরাচালান কার্যক্রম অনেকটা কমে যায়। তবে চোরাচালানের অভিযোগে ইতোমধ্যে কিছু নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হয়েছেন।

সিলেটের নতুন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেছেন, চোরাচালানে যারা জড়িত, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে, এবং কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।

এ বিষয়ে সংক্ষুব্ধ নাগরিক আন্দোলন সিলেটের সমন্বয়ক আবদুল করিম চৌধুরীও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে চোরাচালান রোধে কঠোর নজরদারি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে ভবিষ্যতে কেউ আবার এ ধরনের অবৈধ কাজে লিপ্ত না হতে পারে।

সিলেটের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলো দুই বছর ধরে ভারতীয় চিনি চোরাচালানের নিরাপদ রুটে পরিণত হয়েছে। এই অবৈধ কার্যক্রমের পেছনে প্রধান ভূমিকা পালন করেছেন ছাত্রলীগের শীর্ষ ৪ নেতা, যাদের মধ্যে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজ, মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নাঈম আহমদ এবং সিলেট সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ও সিলেট সিটি করপোরেশনের ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রুহেল আহমদ। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর, এই নেতারা লাপাত্তা হয়ে আত্মগোপনে চলে যান, যা চুরাচালানের কার্যক্রমে নতুন মোড় নিয়ে এসেছে।

চোরাকারবারিদের দেওয়া তথ্যমতে, সীমান্তের শতাধিক পয়েন্ট দিয়ে ‘বুঙ্গার চিনি’ হিসেবে পরিচিত ভারতীয় চিনি বাংলাদেশে ঢোকে। সিলেট থেকে এসব চিনি নিরাপদে সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে ছাত্রলীগের চার নেতা সবচেয়ে বেশি সক্রিয় ছিলেন। তাঁরা সিলেটের জৈন্তাপুর, জকিগঞ্জ, কানাইঘাট, গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার উপজেলার সীমান্তবর্তী শতাধিক স্থানে চিনি পাচারের কাজ তদারকি করতেন। সাধারণত শুকনো মৌসুমে হাঁটাপথে বা মোটরসাইকেলে এবং বর্ষায় নৌকাযোগে পণ্য সীমান্তে আনা হয়।

সীমান্ত এলাকায় অন্তত এক হাজার চোরাকারবারি সম্পৃক্ত ছিল এই অবৈধ কার্যক্রমে। ছাত্রলীগ নেতারা মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে চিনি পাচার সমন্বয় করতেন, যেখানে ট্রাকের আগে-পেছনে মোটরসাইকেল ও প্রাইভেট কারের বহর বসিয়ে চিনি পাচার করাতেন। প্রতিদিন গড়ে দুই থেকে আড়াই কোটি টাকার চিনি সীমান্তে আনা হতো, যা তামাবিল-জৈন্তাপুর-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়ক ও ভোলাগঞ্জ-কোম্পানীগঞ্জ-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়ক দিয়ে সিলেটের পাইকারি বাজার কালীঘাটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিতরণ করা হতো।

মনিরুল গণভবন থেকে প্রায় ২৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করেন, যা ছাত্র আন্দোলন দমাতে

চিনি চোরাচালানের এই অবৈধ কার্যক্রম থেকে ছাত্রলীগ নেতারা প্রতিমাসে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করতেন। ট্রাকপ্রতি গড়ে পাঁচ থেকে আট হাজার টাকা কারবারিদের দিয়ে চিনি পাচারের সুবিধা দিতেন। এই অর্থ উপার্জন তাঁদের জীবনযাত্রায় ব্যাপক পরিবর্তন আনে, যেমন ‘আঙুল ফুলে কলা গাছ’ হয়ে ওঠা। এ টাকা দিয়ে তাঁরা বিলাসবহুল জীবনের স্বাদ গ্রহণ করতেন, যা স্থানীয় বাসিন্দাদের জানানো গেছে।

সরকার পতনের পর, এই চার নেতা আত্মগোপনে চলে যান, এবং পাচারের কার্যক্রম কিছুটা কমে আসে। তবে চোরাচালানের অভিযোগে ইতোমধ্যে কিছু নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হয়েছেন। পুলিশ জানায়, সরকারের পতনের আগে দেড় মাসের ব্যবধানে সিলেটে চিনি চোরাচালানে সম্পৃক্ততার অভিযোগে ছাত্রলীগের অন্তত আটজন গ্রেপ্তার হন।

গোয়াইনঘাট উপজেলার ভারত সীমান্তবর্তী সোনাটিলা গ্রামে, যা ঝোপঝাড়বেষ্টিত উঁচুনিচু টিলা দিয়ে বাংলাদেশের মধ্যে প্রবেশ করা হয়, সেখানে প্রতিদিন গড়ে কয়েকজন নারী-পুরুষ চিনির বস্তা বহন করে সিলেটে ঢোকে। তাঁদের কারও মাথায় চিনির বস্তা, কারও মাথায় পণ্যসামগ্রীর বোচকা থাকে। সীমান্ত দিয়ে আনা চিনির বস্তা মোটরসাইকেল ও ইজিবাইকে আশপাশের বাড়ি ও দোকানে মজুত করা হয়, পরে সড়ক ও নৌপথে সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে দেওয়া হয়। এইভাবে চিনি পাচার তিনটি উপজেলার বিভিন্ন সীমান্তবর্তী গ্রামে সংঘটিত হয়।

চার দিন সিলেটের তিনটি উপজেলার বিভিন্ন সীমান্তবর্তী গ্রামে নিয়মিতভাবে চোরাচালানের চিত্র দেখা যায়, যা সিলেটের আইনশৃঙ্খলা এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য বড় ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করেছে।

চোরাকারবারিরা সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিন গড়ে দুই থেকে আড়াই কোটি টাকার চিনি আনতে সক্ষম হয়েছিল। তামাবিল-জৈন্তাপুর-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়ক ও ভোলাগঞ্জ-কোম্পানীগঞ্জ-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়ক দিয়ে সিলেট নগরে পাইকারি বাজার কালীঘাটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পৌঁছে দেওয়া হয়। এই কার্যক্রম প্রতিদিন মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত চালু থাকত।

চোরাকারবারিদের মতে, চিনি পাচার করতে ট্রাকের আগে-পেছনে মোটরসাইকেল ও প্রাইভেট কারের বহর বসিয়ে নিরাপদে পণ্য নগরে পৌঁছে দেওয়া হয়। এই প্রক্রিয়ায় ছাত্রলীগের চার নেতা তাঁদের প্রহরায় পাহারা দিয়ে থাকতেন। ট্রাকপ্রতি গড়ে পাঁচ থেকে আট হাজার টাকা কারবারিদের দিয়ে চিনি পাচার সহজতর করা হত।

চিনি পাচারের এই অবৈধ কার্যক্রমের ফলে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মধ্যে একটি অবিশ্বাস ও অসাধু প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হয়েছে। ব্যবসায়ীরা কম দামে চিনি কিনে বেআইনকভাবে বাজারে ঢুকিয়ে ব্যবসা প্রসারিত করার চেষ্টা করতেন। এই চিনি পাচার থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ হওয়া চিনির গুণমান ও নিরাপত্তাও প্রশ্নবিদ্ধ।

সিলেটের নতুন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান জানান, সরকারের পতনের আগে দেড় মাসের ব্যবধানে চিনি চোরাচালানে সম্পৃক্ততার অভিযোগে ছাত্রলীগের অন্তত আটজন গ্রেপ্তার হয়েছেন। ১৬ জুন চিনি জব্দের ঘটনায় জৈন্তাপুরে নিজপাট ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনসুর আহমদকে আসামি করা হয়। বিয়ানীবাজারে চিনির ট্রাক লুটের ঘটনায় ১৪ জুন উপজেলা ও পৌর শাখা বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়, তারপরই সেখানকার দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ১৪ জুন বিকেলে জকিগঞ্জে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ৩২ বস্তা চিনি ছিনতাইয়ের অভিযোগ ওঠে।

পুলিশ জানায়, এই ধরনের অবৈধ কার্যক্রম প্রতিরোধে নিয়মিত অভিযান চালানো হচ্ছে এবং আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সিলেটের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কমিশনার জোবায়েদুর রহমান বলেন, “চোরাই চিনি জব্দে নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। কাউকেই ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। যাঁদের বিরুদ্ধেই অভিযোগ আসছে, তাঁদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নিচ্ছে। ভবিষ্যতেও নেবে।”

আইনজীবী প্রবাল চৌধুরী গত বছরের ১৩ আগস্ট এই চার নেতা সহ ছাত্রলীগের ৫৫ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, ফেসবুকে চোরাকারবারি ও অছাত্র দিয়ে ছাত্রলীগের কমিটি গঠনের বিষয়ে প্রতিবাদমূলক স্ট্যাটাস দেওয়ার পর অভিযুক্তরা তাঁকে প্রাণে মারতে গুলি করেন, যার ফলে তিনি আহত হন। মামলাটিতে চিনি পাচারের হোতা হিসেবে চার নেতার পাশাপাশি সিলেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মিছবাউল করিম এবং জকিগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আতিকুল আলমের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এই মামলাটি বর্তমানে সিআইডি দ্বারা তদন্তাধীন।

সিলেটে ছাত্রলীগ নেতাদের চিনি চোরাচালানে জড়িত থাকার অভিযোগের পর সরকার পতনের পূর্বে তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হয়, যা ছাত্রলীগের ওপর রাজনৈতিক চাপ বাড়ায়। সরকারের পতনের পর, এই নেতারা আত্মগোপনে চলে যান, যার ফলে পাচার কার্যক্রমে নতুন মোড় আসে এবং সম্পূর্ণ রূপে বাধাগ্রস্ত হয় না।

সংক্ষুব্ধ নাগরিক আন্দোলন সিলেটের সমন্বয়ক আবদুল করিম চৌধুরী প্রথম আলোকে জানান, সরকার পতনের পর অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতারা গা ঢাকা হয়েছেন এবং ছাত্র-জনতা এখনও মাঠে আছেন। সীমান্তে নজরদারিও বেড়েছে, তাই চিনি চোরাচালান আপাতত কিছুটা কমেছে। তিনি আরো বলেন, “আবার যেন কেউ চোরাচালান করতে না পারে, সেদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।”

চিনি পাচারের এই অবৈধ কার্যক্রমের প্রতিবাদে স্থানীয় জনগণ এবং ব্যবসায়ীরা গাঢ় অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। সীমান্ত এলাকাসমূহের নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থা কমে গেছে এবং তারা সরকারের পুনরায় প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করার জন্য আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার প্রত্যাশা করছেন। জনগণ আশা করছেন, নতুন প্রশাসন এই ধরনের অবৈধ কার্যক্রম দ্রুত রোধ করবে এবং এলাকার শান্তি-আনন্দ ফিরিয়ে আনবে।

ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলায় র‌্যাব-৬-এর অভিযানে এক অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী গ্রেফতার

মামলার তদন্ত সিআইডি করছে এবং আইনের আওতায় এই অপরাধীদের জন্য কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। বিচার প্রক্রিয়ার প্রতিটি ধাপে আইনি ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য আদালত এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো কঠোরভাবে কাজ করছে।

চিনি চোরাচালানের এই অবৈধ কার্যক্রমের ফলে স্থানীয় অর্থনীতি ও সমাজে নানা প্রভাব পড়েছে। অবৈধ চিনি পাচার থেকে সংগঠিত চক্রগুলি স্থানীয় বাজারে অনিয়ন্ত্রিত প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করেছে, যা বৈধ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষতি করছে। চিনি পাচারের মাধ্যমে প্রবেশ করা চিনির অপ্রতিরোধ্য প্রবাহ বৈধ অর্থনৈতিক গঠনতন্ত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে এবং স্থানীয় ব্যবসায়ীদের আয়ের উৎস কমিয়ে দিচ্ছে।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর, স্থানীয় রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে ছাত্রলীগের অবৈধ কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণের জন্য নতুন প্রশাসন কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। চিনি চোরাচালান চক্রের বিরুদ্ধে পরিচালিত এই অভিযান রাজনৈতিক দিক থেকে গম্ভীর পরিণতি ফেলতে পারে, বিশেষ করে ছাত্রলীগের জন্য। ছাত্রলীগের নেতারা লাপাত্তা হয়ে থাকলেও, তাদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে এই ধরনের অবৈধ কার্যক্রম রোধে এবং রাজনৈতিক দলের অপব্যবহার নিরসনে আরো কঠোর নীতি গ্রহণের সম্ভাবনা রয়েছে।

সিলেটের নিরাপত্তা বাহিনী এখন চিনি চোরাচালানের প্রতিরোধে নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। সীমান্ত এলাকাসমূহে নজরদারি বাড়িয়ে দেওয়া, স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে সমন্বয় করে অবৈধ কার্যক্রম নিরোধ করার চেষ্টা চলছে। এছাড়াও, স্থানীয় সরকার এবং নিরাপত্তা বাহিনীগুলোকে আরও প্রশিক্ষণ দিয়ে চোরাচালানের প্রতিরোধে সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে।

সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন এবং এ কে এম শহীদুল হককে গ্রেপ্তার

এই ধরনের অবৈধ কার্যক্রমের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মিডিয়ার ভূমিকা অপরিসীম। প্রথম আলোসহ স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো স্থানীয় জনগণকে সচেতন করার মাধ্যমে চোরাচালানের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলছে। পাশাপাশি, সমাজিক সংহতি ও জনসচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে এই ধরনের অবৈধ কার্যক্রমের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করার আহ্বান জানানো হচ্ছে।

চিনি পাচার একটি আঞ্চলিক সমস্যা, যা বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে সীমান্ত অঞ্চলের নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সমস্যার সৃষ্টি করেছে। এই ধরনের অবৈধ কার্যক্রমের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দুই দেশের সরকারের মধ্যে আরও ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা প্রয়োজন। সীমান্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নত করার জন্য আন্তর্জাতিক মানের প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণের প্রয়োগ একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে।

সিলেটের সীমান্তবর্তী এলাকায় ছাত্রলীগের শীর্ষ ৪ নেতার নেতৃত্বে চলে আসা চিনি চোরাচালান চক্রটি স্থানীয় সমাজ, অর্থনীতি ও নিরাপত্তার জন্য গুরুতর সমস্যার সৃষ্টি করেছে। সরকারের পতনের পর, এই নেতারা লাপাত্তা হয়ে যাওয়ার পরও, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো এই অবৈধ কার্যক্রমের বিরুদ্ধে তীব্রভাবে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় জনগণ ও নাগরিক আন্দোলন এই ধরনের অবৈধ কার্যক্রমের বিরুদ্ধে আরও সতর্ক ও সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে। ভবিষ্যতে এই ধরনের সমস্যা সমাধানে শক্তিশালী আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সুষ্ঠু পরিচালনা অপরিহার্য।

 

চিনি চোরাচালানের এই কাণ্ড শুধুমাত্র সিলেট অঞ্চলের সমস্যাই নয়, বরং পুরো দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতার জন্যও একটি বড় হুমকি সৃষ্টি করেছে। ছাত্রলীগের নেতারা যারা এই অবৈধ কার্যক্রমে জড়িত ছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। পাশাপাশি, সীমান্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও উন্নত করা এবং স্থানীয় জনগণকে সচেতন করে তুলতে হবে যেন তারা এই ধরনের অবৈধ কার্যক্রমের বিরুদ্ধে সচেতন ও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে পারে।

ভ্যানে লাশের স্তূপ করছে পুলিশ, ভাইরাল ভিডিও নিয়ে যা জানা গেল ভ্যানে লাশের স্তূপের ভিডিওটি আশুলিয়ার

স্থানীয় জনগণকে আহ্বান জানানো হচ্ছে, তারা যেন অবৈধ কার্যক্রমের কোনো লক্ষণ দেখলে তা তৎক্ষণাত পুলিশে জানায় এবং নিজেদের নিরাপত্তার প্রতি সচেতন থাকে। চিনি চোরাচালানের মত অবৈধ কার্যক্রম সমাজের ক্ষতি করে এবং দেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাই, সকলের সহযোগিতা ও সচেতনতা বৃদ্ধি এই ধরনের সমস্যার সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

এই খবরটি বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলের একটি চিনি চোরাচালান চক্র নিয়ে। গত দুই বছর ধরে সিলেটের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলো ভারতীয় চিনির চোরাচালানের জন্য একটি নিরাপদ রুট হয়ে উঠেছে। ট্রাকে করে এই চিনি সিলেট নগরে এনে সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই চক্রের মূল নেতৃত্বে ছিলেন ছাত্রলীগের চার শীর্ষ নেতা: জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজ, মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নাঈম আহমদ, এবং সিলেট সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ও সিলেট সিটি করপোরেশনের ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রুহেল আহমদ। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর তারা আত্মগোপনে চলে গেছেন।

চোরাচালান কার্যক্রমে জড়িতরা সিলেটের সীমান্তবর্তী এলাকার শতাধিক পয়েন্ট দিয়ে চিনিসহ অন্যান্য চোরাই পণ্য বাংলাদেশে আনতেন। পরে এই চিনি ট্রাকে করে সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়ার কাজ করতেন ছাত্রলীগের এই চার নেতা। ট্রাকগুলোকে নিরাপদে শহরে প্রবেশ করাতে তারা প্রাইভেটকার এবং মোটরসাইকেলের বহর দিয়ে পাহারা দিতেন।

নতুন সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেছেন, তিনি নতুন দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন এবং আগের বিষয়গুলো নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চান না। তবে এখন থেকে যারা চোরাচালানে জড়িত থাকবেন, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে এবং অভিযুক্ত ব্যক্তিরা যে দলেরই হোক না কেন, কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।

দাম কমল জ্বালানি তেলের, আজ রাত ১২টা থেকে কার্যকর

এই চিনি চোরাচালানের বিষয়ে সিলেটের সীমান্তবর্তী সোনাটিলা গ্রামের একটি ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে, যেখানে দেখা গেছে, কিছু লোক চিনির বস্তা এবং অন্যান্য পণ্যসামগ্রী মাথায় করে সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকছে। এই চিনিগুলো পরে মোটরসাইকেল এবং ইজিবাইকে করে আশেপাশের বাড়ি ও দোকানে মজুত করা হচ্ছে এবং সেখান থেকে সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাঠানো হচ্ছে।

 

shoberkotha

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version