অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মো. মনিরুল ইসলামকে কেন্দ্র করে ওঠা নানা অভিযোগের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনা এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগগুলো এক নতুন আলোচনার সূত্রপাত করেছে। মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো বিভিন্ন স্তরের এবং বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে আনা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে নিয়োগ, টেন্ডার বাণিজ্য, কেনাকাটা, এবং নারী কেলেঙ্কারির মতো গুরুতর অভিযোগ। এ ঘটনায় বিশেষ শাখার (এসবি) প্রধান হিসেবে তার ভূমিকা এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের প্রশ্ন উঠেছে।

বোন সহকারী জজ, প্রতিবেশীদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে জমি দখলের অভিযোগ

১. নিয়োগ ও টেন্ডার বাণিজ্য: মনিরুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে, তিনি তার পছন্দের ব্যক্তিদের নিয়োগে অগ্রাধিকার দিতেন এবং টেন্ডার প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি করতেন। এই অভিযোগের কারণে তার ক্ষমতা এবং দায়িত্বশীলতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অভিযোগ আছে যে, বিভিন্ন ব্যবসায়িক এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করে তিনি ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হতেন।

২. অর্থ আত্মসাৎ: সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগগুলোর একটি হলো ২৫ কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনা। সূত্রমতে, গত ৪ঠা আগস্ট গণভবন থেকে মনিরুল ছাত্র আন্দোলন দমন এবং এসবি সদস্যদের প্রণোদনা দেওয়ার জন্য এই অর্থ সংগ্রহ করেন। তবে, ৫ই আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর থেকে মনিরুল অফিসে আসেননি এবং সেই সময়ই এই টাকা গায়েব হয়ে যায়। অভিযোগ রয়েছে, মনিরুলের ঘনিষ্ঠ কয়েকজন কর্মকর্তা মিলে এই অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।

৩. নারী কেলেঙ্কারি: মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ রয়েছে যে, তিনি বিভিন্ন নারী কেলেঙ্কারিতে জড়িত ছিলেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে যে, তিনি একজন জনপ্রিয় চলচ্চিত্র অভিনেত্রীকে একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট উপহার দেন এবং আরেকজন অভিনেত্রীর সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল। এইসব অভিযোগ তার ব্যক্তিগত জীবনের নৈতিকতা এবং পেশাদারিত্বের প্রশ্ন উত্থাপন করেছে।

মীর মাহফুজুর রহমান ‘মুগ্ধ’ শুধুমাত্র একটি নাম নয়, বরং ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচার উৎখাতে আন্দোলনের আত্মত্যাগের মূর্ত প্রতীক

অভিযোগগুলোর বিষয়ে মনিরুল ইসলাম সরাসরি প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। তিনি উল্লেখ করেন যে, ২৫ কোটি টাকা সংগ্রহের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন। মনিরুলের মতে, ছাত্র আন্দোলনের সময় তিনি আমেরিকায় একটি সেমিনারে অংশগ্রহণ করছিলেন এবং তিনি ২০শে জুন দেশে ফিরে আসেন। এছাড়া, তিনি কানাডা বা সিঙ্গাপুরে কোনো বাড়ি বা ব্যবসার কথা অস্বীকার করেছেন। নিয়োগ বাণিজ্য, টেন্ডার বাণিজ্য, এবং চাঁদাবাজির অভিযোগগুলোকেও মনিরুল সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করেন।

এই সমস্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে একটি নিরপেক্ষ এবং স্বচ্ছ তদন্ত প্রক্রিয়া জরুরি। কারণ, এসব অভিযোগ কেবল মনিরুল ইসলামের ব্যক্তিগত চরিত্রকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে না, বরং এটি পুরো পুলিশ বাহিনীর নৈতিকতা এবং বিশ্বাসযোগ্যতা সম্পর্কেও প্রশ্ন তুলছে। একটি নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে সত্য উদঘাটন এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা অপরিহার্য।

শৈলকুপায় এক মূর্তিমান আতংকের নাম মফিজ চেয়ারম্যান

এই ঘটনা বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভেতরে অব্যবস্থাপনা এবং দুর্নীতির প্রসঙ্গ উত্থাপন করেছে। মনিরুল ইসলামের মতো উর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এ ধরনের গুরুতর অভিযোগ প্রমাণ করে যে, বাহিনীর ভেতরে দুর্নীতি এবং ক্ষমতার অপব্যবহার বিদ্যমান। এটি বাহিনীর অভ্যন্তরীণ সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা নির্দেশ করছে। বাহিনীর নৈতিক মান উন্নত করতে এবং জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।

ঝিনাইদহে কোটা বিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের উপর ছাত্রলীগের হামলা, আহত-৫

এ ঘটনায় সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেকে মনে করছেন যে, এ ধরনের ঘটনা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে তাদের আস্থার অভাব তৈরি করছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই বিষয়ে ব্যাপক আলোচনা এবং সমালোচনা দেখা গেছে, যা প্রমাণ করে যে, জনগণ বাহিনীর প্রতি আস্থা হারাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে, এ ধরনের অভিযোগের যথাযথ তদন্ত এবং দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে যাতে জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধার করা যায়।

অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মো. মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো কেবলমাত্র তার ক্যারিয়ারকে প্রভাবিত করছে না, বরং এটি পুরো পুলিশ প্রশাসনের প্রতি জনগণের আস্থা এবং বিশ্বাসকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। এ কারণে, একটি স্বচ্ছ এবং নিরপেক্ষ তদন্ত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অভিযোগগুলোর সত্যতা নিশ্চিত করা এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি। পুলিশের অভ্যন্তরীণ সংস্কারের মাধ্যমে নৈতিকতা এবং পেশাদারিত্ব বজায় রাখা অপরিহার্য, যাতে জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধার করা যায় এবং দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়।

ঝিনাইদহে কোটা বিরোধীদের পদযাত্রা ও সমাবেশ

মানবজমিন মাধ্যমে  প্রধান কর্মকর্তা অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক  মনিরুল ইসলাম

নিয়োগ, টেন্ডার বাণিজ্য, কেনাকাটা, নারী কেলেঙ্কারিসহ নানা অভিযোগ উঠছে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি)-এর প্রধান কর্মকর্তা অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মো. মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শেষের দিকে পুরোটা সময় মনিরুল পুলিশ সদরদপ্তর ও ডিএমপি’র কন্ট্রোলরুমে কাটিয়েছেন। সূত্রমতে, আন্দোলন দমন-পীড়নের কাজে খরচের জন্য গণভবন থেকে সর্বশেষ গত ৪ঠা আগস্ট সকালে প্রায় ২৫ কোটি টাকা আনেন এই মনিরুল। পুরো টাকাটাই তার এসবি অফিসের নিজস্বকক্ষে সুরক্ষিত ছিল।

৫ই আগস্ট শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালানোর পর মনিরুল আর অফিস করেননি। এসবি সূত্র জানায়, এ সময় এসবি’তে কর্মরত তার হেল্পিং হ্যান্ড হিসেবে পরিচিত দুই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পুরো টাকাটাই গায়েব করে দেন। সূত্র জানায়, জঙ্গি অভিযান নাটকের মাধ্যমে পুলিশ বাহিনীতে নাম ছড়িয়ে পড়ে মনিরুলের। এ সময় তার প্রধান ও বিশেষ সহযোগী হিসেবে ছিলেন সাবেক কাউন্টার টেরোরিজম (সিটিটিসি) প্রধান এবং অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান ও পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি (অ্যাডমিন) পদে দায়িত্বরত এক কর্মকর্তা। সূত্র জানায়, গত ৪ঠা আগস্ট গণভবন থেকে ২৫ কোটি টাকা ছাত্র আন্দোলন দমাতে প্রণোদনা হিসেবে এসবি’র ডিউটিরত সদস্যদের মধ্যে বিতরণ করতে এ টাকা আনেন মনিরুল।

এসবি’র এসএস (অর্থ) এবং এসবি প্রধানের স্টাফ অফিসার পুরো বিষয়টি জানতেন।এসবি’র অতিরিক্ত ডিআইজিকে (প্রশাসন ও অর্থ) তারা বিষয়টি জানালে তিনজন মিলে সব অর্থ আত্মসাৎ করার সিদ্ধান্ত নেন। গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট আছে অজুহাতে এই টাকা আত্মসাতের উদ্দেশ্যে ৫ই আগস্ট সরকার পতনের পর এসবি প্রধানের অফিস কক্ষ, তার বেইলি রোডের বাসা এবং সিটি এসবি’র ডিআইজি অফিসে তারা তিনজন তালা লাগান। ৬ই আগস্ট এসবি কার্যালয়ের সকল সিসিটিভি ও ডিশ লাইন কেটে দেন। ৬ই আগস্ট থেকে ১২ই আগস্ট পর্যন্ত এই সময়ের ভেতর এসবি প্রধান মনিরুলের দপ্তরে রাখা ২৫ কোটি টাকা তিনজন মিলে আত্মসাৎ করেছেন বলে জানিয়েছে সূত্র।

এসবি’র একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে সূত্র জানায়, মনিরের নিজস্ব একটি সিন্ডিকেট ছিল। যেই সিন্ডিকেটে সাবেক মহানগর গোয়েন্দা প্রধান হারুন অর রশীদ, মনির, সারোয়ার নজরুলসহ একাধিক কর্মকর্তা ছিলেন। এই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পুলিশের পোস্টিং, ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি, টেন্ডার বাণিজ্য চালিয়েছেন। জানা গেছে, মনিরুলের কানাডায় নিজস্ব দু’টি বাড়ি এবং সিঙ্গাপুরে রয়েছে নিজস্ব ব্যবসা। ঢাকা, কেরানীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, সিলেট, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিদিন বাজারের ব্যাগে করে টাকা আসতো মনিরুলের বাসায়। এসব টাকার ক্যারিয়ার হিসেবে কাজ করতেন এসবি’র বর্তমান এক ডিআইজি, এসএস ফাইন্যান্স এবং আরেক কর্মকর্তা।

মনিরুলের ছিল স্থায়ী দুই রক্ষিতা। তাদের মধ্যে একজন হচ্ছেন বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় এক চলচ্চিত্র অভিনেত্রী। সম্প্রতি তিনি এক নির্মাতাকে ঘটা করে বিয়ে করেন। এই অভিনেত্রীকে মনিরুল বেইলি রোডে একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট উপহার দিয়েছেন। যেখানে মনিরুল নিয়মিত অবকাশ যাপন করতেন। আরেকজন বতর্মান সময়ের খ্যাতিমান বিজ্ঞাপন নির্মাতা এবং টেলিভিশন ও চলচ্চিত্র পরিচালকের সাবেক স্ত্রী এবং অভিনেত্রী। সরজমিনে দেখা গেছে, রাজকীয়ভাবে কয়েক কোটি টাকা খরচ করে এসবি প্রধান মনিরুলের নিজস্ব অফিস ও মিটিংরুম সাজিয়েছেন।

মনিরুলের গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর থানার বাহাড়া গ্রামে। মনিরুলের বড় ছেলে ইংল্যান্ডে পড়াশোনা করছেন এবং ছোট মেয়ে কানাডায়। তার স্ত্রী সংশ্লিষ্ট এক মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব পদে কর্মরত।ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট গঠনে মূল ভূমিকা পালন করেছিলেন মনিরুল। এ ইউনিটের প্রধান হিসেবে তিনি পরবর্তীতে দায়িত্ব পালন করেন। ডিএমপি ও কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) এর প্রধান থাকা অবস্থায় জঙ্গি অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে একদিকে যেমন সরকারের আস্থাভাজন হয়ে ওঠেন। অন্যদিকে তার কপাল খুলে যায়।

এ সময় বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের দমন-পীড়নের নামে বেপরোয়া হয়ে ওঠেন মনিরুল। সিটিটিসিতে থাকা অবস্থায় তার সহযোগী হিসেবে কাজ করেছেন পুলিশ সদর দপ্তরের এক ডিআইজি (এডমিন)। মনিরুলের ঘনিষ্ঠ এক এসবি সূত্র জানায়, ৫ই আগস্ট পর্যন্ত মনিরুল, সাবেক পুলিশের মহাপরির্দক, গোয়েন্দা প্রধান হারুন, সিটিটিসি’র ডিআইজি মনির, ডিএমপি কমিশনার, সিআইডি প্রধানসহ একাধিক কর্মকর্তা পুলিশ সদর দপ্তর ও ডিএমপি’র অপারেশন কর্নার এবং কন্ট্রোলরুমে অবস্থান করেন।

সরকার পতনের শেষের দিকে তারা এই দুই স্থানে বসে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন। ফিল্ডে দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের বিভিন্ন ধরনের দিক- নির্দেশনা দিতেন। ১লা আগস্ট থেকে অফিসে আসা বন্ধ করে দেন মনিরুল, সারোয়ার এবং নজরুল। মনিরুলের প্রতারণা থেকে বাদ যায়নি একাধিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে একজন ঠিকাদারকে দিয়ে মনিরুল প্রায় ৪১ লাখ টাকার কাজ করালেও পরবর্তীতে তিনি বিল পরিশোধ করেননি।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ঠিকাদার হতাশায় ছাদ থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। অভিযোগের বিষয়ে সম্প্রতি মানবজমিন’র সঙ্গে মনিরুলের হোয়াটসঅ্যাপে কথা হয়। তিনি বলেন, ২৫ কোটি টাকা কোথা থেকে আসবে।

ছাত্র আন্দোলনের সময় আমি আমেরিকায় ছিলাম একটি সেমিনারে। ২০শে জুন দেশে ফিরি। গণভবন থেকে টাকা আনার বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা। ভিত্তিহীন। এটার কোনো সুযোগ নেই। কানাডায় ২টি বাড়ি, সিঙ্গাপুরে নিজস্ব ব্যবসা সম্পর্কে তিনি বলেন, আমি কখনো কানাডা যাইনি সেখানে বাড়ি থাকার প্রশ্নই আসে না। কানাডা কেন দেশেও আমার নিজ নামে কোনো ফ্ল্যাট নেই। নিয়োগ বাণিজ্য, ব্যাগভর্তি টাকা, টেন্ডার বাণিজ্য সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রতিটি অভিযোগ মিথ্যা।

বর্তমানে এসবিতে যারা কর্মরত আছেন বিশেষ করে ডিআইজি সারোয়ার তিনি এসব দেখে থাকেন। এগুলো আমার বিষয় না। তিনি বলেন, অভিনেত্রী-মডেলদের সঙ্গে আমার সম্পর্কের কথা বলে চরিত্র হননের চেষ্টা করা হচ্ছে। বর্তমানে কোথায় আছেন জানতে চাইলে মনিরুল প্রথমে বলেন, ৫ই আগস্ট সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে করে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে আশ্রয় নেন তিনি। বর্তমানে এক আত্মীয়ের বাসায় আছেন।

ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট গঠনে মূল ভূমিকা পালন করেছিলেন মনিরুল। এ ইউনিটের প্রধান হিসেবে তিনি পরবর্তীতে দায়িত্ব পালন করেন। ডিএমপি ও কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) এর প্রধান থাকা অবস্থায় জঙ্গি অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে একদিকে যেমন সরকারের আস্থাভাজন হয়ে ওঠেন। অন্যদিকে তার কপাল খুলে যায়। এ সময় বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের দমন-পীড়নের নামে বেপরোয়া হয়ে ওঠেন মনিরুল।

সিটিটিসিতে থাকা অবস্থায় তার সহযোগী হিসেবে কাজ করেছেন পুলিশ সদর দপ্তরের এক ডিআইজি (এডমিন)। মনিরুলের ঘনিষ্ঠ এক এসবি সূত্র জানায়, ৫ই আগস্ট পর্যন্ত মনিরুল, সাবেক পুলিশের মহাপরির্দক, গোয়েন্দা প্রধান হারুন, সিটিটিসি’র ডিআইজি মনির, ডিএমপি কমিশনার, সিআইডি প্রধানসহ একাধিক কর্মকর্তা পুলিশ সদর দপ্তর ও ডিএমপি’র অপারেশন কর্নার এবং কন্ট্রোলরুমে অবস্থান করেন। সরকার পতনের শেষের দিকে তারা এই দুই স্থানে বসে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন। ফিল্ডে দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের বিভিন্ন ধরনের দিক- নির্দেশনা দিতেন।

১লা আগস্ট থেকে অফিসে আসা বন্ধ করে দেন মনিরুল, সারোয়ার এবং নজরুল। মনিরুলের প্রতারণা থেকে বাদ যায়নি একাধিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে একজন ঠিকাদারকে দিয়ে মনিরুল প্রায় ৪১ লাখ টাকার কাজ করালেও পরবর্তীতে তিনি বিল পরিশোধ করেননি। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ঠিকাদার হতাশায় ছাদ থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।

অভিযোগের বিষয়ে সম্প্রতি মানবজমিন’র সঙ্গে মনিরুলের হোয়াটসঅ্যাপে কথা হয়। তিনি বলেন, ২৫ কোটি টাকা কোথা থেকে আসবে। ছাত্র আন্দোলনের সময় আমি আমেরিকায় ছিলাম একটি সেমিনারে। ২০শে জুন দেশে ফিরি। গণভবন থেকে টাকা আনার বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা। ভিত্তিহীন। এটার কোনো সুযোগ নেই।

কানাডায় ২টি বাড়ি, সিঙ্গাপুরে নিজস্ব ব্যবসা সম্পর্কে তিনি বলেন, আমি কখনো কানাডা যাইনি সেখানে বাড়ি থাকার প্রশ্নই আসে না। কানাডা কেন দেশেও আমার নিজ নামে কোনো ফ্ল্যাট নেই। নিয়োগ বাণিজ্য, ব্যাগভর্তি টাকা, টেন্ডার বাণিজ্য সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রতিটি অভিযোগ মিথ্যা।

বর্তমানে এসবিতে যারা কর্মরত আছেন বিশেষ করে ডিআইজি সারোয়ার তিনি এসব দেখে থাকেন। এগুলো আমার বিষয় না। তিনি বলেন, অভিনেত্রী-মডেলদের সঙ্গে আমার সম্পর্কের কথা বলে চরিত্র হননের চেষ্টা করা হচ্ছে। বর্তমানে কোথায় আছেন জানতে চাইলে মনিরুল প্রথমে বলেন, ৫ই আগস্ট সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে করে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে আশ্রয় নেন তিনি। বর্তমানে এক আত্মীয়ের বাসায় আছেন।

shoberkotha

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version