বসির আহাম্মেদ, ঝিনাইদহ-ঝিনাইদহে ২১৩ জন ছাত্রীর বিয়ে হয়ে গেছে এসএসসি পরীক্ষার আগেই। আর স্বামীর বাড়িতে থাকায় তারা এসএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করতে পারেনি।

ফলে ফরম পুরণ করলেও তারা পরীক্ষার হলে উপস্থিত হতে পারেনি। এমনকি ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হাটগোপালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে অনুপস্থিত ছিলো ১৫ ছাত্রী। শিক্ষার্থীর ১৫ জনই বিয়েজনিত কারণে পরীক্ষার হলে অনুপস্থিত ছিলেন।

ঝিনাইদহের মোবারকগঞ্জ সুগার মিলের শ্রমিক-কর্মচারীদের কর্মবিরতি দিয়ে বিক্ষোভ

ঝিনাইদহ জেলা শিক্ষা অফিসের এক জরিপ তথ্যে বাল্য বিয়ের ভয়াবহ এই চিত্র উঠে আসে। এ নিয়ে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের তোলপাড় শুরু হয়। এখানে প্রশ্ন উঠেছে বাল্য বিয়ে প্রতিরোধ কমিটির তৎপরতা নিয়েও।

ঝিনাইদহ জেলা শিক্ষা অফিসের পাঠানো জরিপ তথ্য থেকে জানা গেছে, ঝিনাইদহ সদর উপজেলায় চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় ৬০ জন ছাত্রী হলে অনুপস্থিত ছিল। এর মধ্যে ৪৬ জন বিয়েজনিত কারণে পরীক্ষা দিতে পারেনি।

ডোনাল্ড লুর সফর: নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য ঢাকার আহ্বান আলোচনায় আসতে পারে, বলেছেন হাসান মাহমুদ

একই ভাবে হরিণাকুন্ডু উপজেলায় অনুপস্থিত ১৯ জন নারী পরীক্ষার্থী মধ্যে ১৪ জন, মহেশপুরে অনুপস্থিত ৬৮ জনের মধ্যে ৫০ জন, শৈলকুপায় অনুপস্থিত ৭১ জনের মধ্যে ৪১ জন, কোটচাঁদপুরে অনুপস্থিত ২৫ জনের মধ্যে ২০ জন ও কালীগঞ্জে ৭২ জন নারী পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৪৪ জন পরীক্ষার হলে অনুপস্থিত ছিল।

জরিপ তথ্যে উল্লেখ করা হয়েছে, শৈলকুপার ফাজিলপুর পরীক্ষা কেন্দ্রে ৩৫ জন নারী পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিলো। এর মধ্যে ১৪ জনই বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে।

সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করে আমদানি পণ্য এড়াতে নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি

শৈলকুপা সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে অনুপস্থিত ৫ জনের মধ্যে ৪ জন, গাড়াগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে অনুপস্থিত ৯ জনের মধ্যে ৮ জন, শৈলকুপা রাহাতন নেছা কেন্দ্রে অনুপস্থিত ৮ জনের মধ্যে ৫ জন, কাতলাগাড়ি কেন্দ্রে অনুপস্থিত ৩ জনের মধ্যে ২ জন, বাগুটিয়া গোপালপুর কেন্দ্রে অনুপস্থিত ৫ জনের মধ্যে ৪ জন ও উমেদপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে অনুপস্থিত ৩ জনের মধ্যে ২ জনের বিয়েজনিত কারণে পরীক্ষা দিতে পারেনি।

নসরুল হামিদ বাংলাদেশের বিদ্যুত ও জ্বালানি খাতের উন্নয়নে এআই-এর পক্ষে কথা বলেন

এছাড়া ঝিনাইদহ সদর উপজেলার উত্তরনারায়নপুর পরীক্ষা কেন্দ্রে অনুপস্থিত ৮ জনের মধ্যে ৬ জন, ঝিনাইদহ শহরের সিদ্দিকীয়া আলীয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রে অনুপস্থিত ৮ জনের মধ্যে ৫ জন, হাটগোপালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে অনুপস্থিত ১৫ জনের মধ্যে ১৫ জন, নারায়নপুর কেন্দ্রে ৪ জনের মধ্যে ৪ জন, উজির আলী কেন্দ্রে ৫ জনের মধ্যে ৫ জন, ঝিনাইদহ সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত ৫ জনের মধ্যে ৪ জন, ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজ কেন্দ্রে অনুপস্থিত ৩ জনের মধ্যে ৩ জনের বিয়ে হয়ে গেছে।

বাল্য বিয়ে প্রতিরোধ নিয়ে কাজ করা রুরাল ডেভলপমেন্ট সেন্টারের নির্বাহী প্রধান আব্দুর রহমান জানান, এসএসসি পরীক্ষার পর বাল্য বিয়ে প্রতিরোধ কমিটির এক সভায় নারী শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার কমে যাওয়ার বিষয়টি তিনি তুলেছিলেন।

ওই সভায় জেলা প্রশাসক বিষয়টি তদন্ত করার নির্দেশ দেন। সে মোতাবেক ঝিনাইদহ জেলা শিক্ষা অফিস ৬ উপজেলায় জরিপ চালিয়ে বাল্য বিয়ের এই সত্যতা পান। তিনি বলেন বাল্য বিয়ে রোধ করতে না পারা আমাদের জন্য খুবই র্দুভাগ্যের বিষয়।

ভারতীয় পণ্য বর্জনের বিএনপির আহ্বান ব্যর্থ; জনগণ নতুন পদক্ষেপ প্রত্যাখ্যান করবে: হাসান মাহমুদ

শৈলকুপা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রেশমা খানম বলেন, এই বিয়ের বিষয়ে প্রশাসনের বিন্দুমাত্র গাফলতি নেই। বাল্য বিয়ে প্রতিরোধ কমিটিতে যারা আছেন সবাই খুবই আন্তরিক। কিন্তু গোপনে ও স্থান পরিবর্তন করে বিয়ে দেওয়ার কারণে এ সব খবর আমরা জানতে পারিনি। তিনি বলেন তরপরও এই ব্যার্থতা তো আমাদেরই।

ঝিনাইদহ জেলা শিক্ষা অফিসার নাজমা সামাওয়াত বলেন, উপজেলা শিক্ষা অফিসারদের পাঠানো তথ্য মোতাবেক এই রিপোর্ট তৈরী করে জেলা প্রশাসকের দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। তাতে অনুপস্থিত ৩২৪ জন নারী পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২১৩ জনের বিয়ে হওয়ার সত্যতা পাওয়া গেছে।

shoberkotha

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version