বসির আহাম্মেদ, ঝিনাইদহ- ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার বজরাপুর গ্রামের বাওড়ের মাটির নীচ থেকে একটি দুইশত বছর পুর্বের পুরাতন পালতোলা নৌাকার সন্ধান মিলেছে।

নৌকাটি দেখার জন্য এলাকায় উৎসুক জনতার ভিড় বাড়ছে বাওড় পাড়ে। নৌকাটি মাটির চার ফুট নীচ থেকে খনন করে পাওয়া গেছে।

বিশাল আকৃতির এই নৌকা নিয়ে প্রতিদিন কৌতূহল মানুষের ভিড় বাড়ছে মহেশপুর উপজেলার এসবিকে ইউনিয়নের বজরাপুর গ্রামের কাগমারির বাওড় পাড়ে।

আশীর্বাদের ৪ দিন পর অন্ত কুন্ডুর মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াসা, পরিবারটিতে চলছে শোকের মাতম

গ্রামবাসী সূত্রে জানাগেছে, বজরাপুর গ্রামের নজের আলীর ছেলে মনছের আলী তিনদিন আগে বজরাপুর বাঁওড় থেকে ধানক্ষেতে পানি দেওয়ার জন্য সেচখাল খনন করছিলেন।

খাল খুড়তে খুড়তে তার কোদালের মাথায় নৌকার কিছু অংশ উঠে আসে। এ খবর প্রচার হয়ে পড়লে গ্রামের মানুষ সমষ্টিগত ভাবে নৌকার সন্ধানে খনন শুরু করতে থাকেন। তিনদিন ধরে খননের পর বৃহস্পতিবার পুরো নৌকার আকৃতি খুঁজে পান।

হরিণাকুন্ডুতে এসএসসি পরীক্ষায় ফেল করায় গলায় ফাঁস দিয়ে এক শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা

সাবেক ইউপি সদস্য পূর্ণিমা রানী জানান, নৌকার প্রতিশব্দ হচ্ছে ‘বজরা’। এই গ্রামের নামও বজরাপুর। হয়তো কোন একসময় এই গ্রামের মানুষের চলাচলের একমাত্র সম্বল ছিল নৌকা। সেই নাম অনুসারে গ্রামটির নামকরণ করা হয়েছে ‘বজরাপুর’।

তিনি আরো জানান, খবর শুনে তিনিও বজরাপুরের বাঁওড় এলাকার হালদার পাড়ায় গিয়ে বৃহৎ নৌকাটি দেখে এসেছেন। তিনি এটি সংরক্ষণের দাবিও করেন।

হাতিলের চেয়ারম্যান সেলিম এইচ রহমান সিআইপি মর্যাদা অর্জন করেছেন

খননকাজে যুক্ত বজরাপুর গ্রামের ইসমাইল মল্লিক জানান, নৌকাটি লম্বায় প্রায় একশত ফুট লম্বা ও চওড়া ২০ ফুট হবে। নৌকার বেশির ভাগ অংশ বাওড়ের মধ্যে ঢুকে আছে। নৌকাটি শাল কাঠ দিয়ে তৈরি হবে হয়তো।

বজরাপুর গ্রামের আমজাদ হোসেন জানান, গ্রামের কৃষক মনছের আলীর জমিতে পাওয়া নৌকাটি বহুকালের পুরাতন। কাঠগুলো পচে নষ্ট হয়ে গেছে। লম্বা কাঠগুলো কিছুটা ভালো আছে।

মাটির চার ফুট নিচে এই নৌকাটি পাওয়া গেছে। তিনি আরো জানান নৌকাটি দেখতে প্রতিদিন শত শত মানুষ ভিড় জমাচ্ছে। তবে এখনো প্রশাসনের লোকজন ঘটনাস্থলে আসেননি।

ঝিনাইদহে ব্রি ধান-১০০’র শস্য কর্তন ও মাঠ দিবস

তথ্য নিয়ে জানাগেছে, বজরা অধিক ওজন বহন করার উপযোগী বড় ধরনের নৌকার সাধারণ নাম। খ্রিষ্টীয় ঊনবিংশ শতাব্দীতে ভারতবর্ষে ইউরোপীয় এবং স্থানীয় ধনাঢ্য ব্যক্তিরা এই ধরনের নৌকা ব্যবহার করত নৌবিহারের জন্য।

এ নৌকার দুই-তৃতীয়াংশ জায়গা জুড়ে থাকত ঘুমানো বা বিশ্রামের কক্ষ। ঘরবাড়ির মতো এসব কক্ষে থাকত জানালা। সাধারণভাবে যাত্রীর ধারণক্ষমতা থাকত ১০ থেকে ১২ জন। এর ভেতরে মাঝি থাকত চারজন। রান্না ও অন্যান্য কাজের জন্য চাকর থাকতো দু’জন।

পূজা রানীর ভাষ্যমতে বজরাপুর গ্রাম একটি প্রাচীন জনপদ। এই গ্রামটি কপোতাক্ষ নদের সংযোগস্থলে গড়ে ওঠে। গ্রামের বেশির ভাগ মানুষ জমিদার ও আধুনিক জীবন যাপনে অভ্যস্ত ছিল। ফলে এই নৌকাটি বজরাপুর গ্রামের নামকরণ ও গ্রামের মানুষের জীবন যাপনের সাক্ষ্য বহন করে।

বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া পূজা রানী নৌকাটি সংরক্ষণের দাবি জানিয়ে গবেষণা কাজে লাগানো যায় কিনা সেই দাবি করেন।

ঝিনাইদহ-যশোর মহাসড়কের বিষয়খালী যেন মৃত্যুর ফাঁদ! তাই দ্রুত সড়কটি মেরামত করা না হলে ঘটতে পারে বড় ধরণের দুর্ঘটনা

বিষয়টি নিয়ে মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনুপ দাস জানান, পুরানো নৌকা পাওয়ার বিষয়টি তিনি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরকে জানাবেন, যাতে তারা ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।

উল্লেখ্য, ঐ নৌকার পাশাপাশি আরো কয়েকটি মালবাহী নৌকার সন্ধান পাওয়া গেছে বলে গ্রামবাসি জানাচ্ছে।

shoberkotha

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version