মেহেদী হাসান ঃ পদ্মায় তীব্র নাব্য সংকট ও অসংখ্য ডুবোচরের কারনে পারাপার ব্যাহত হচ্ছে রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার হাবাসপুর ও পাবনা জেলার সাতবাড়িয়া নৌরুটে।

পদ্মার বুকে বিশাল চর জেগে ওঠায় মুল সড়ক থেকে সাড়ে ৪ কিলোমিটার দুরে একটি অস্থায়ী ট্রলার ঘাট তৈরি করে পারাপার করা হলেও সংযোগ সড়ক না থাকায় ঘাটে যেতে হচ্ছে ঘোরার গাড়ি অথবা পায়ে হেটে।

আজও চাপ নেই দৌলত‌দিয়ায় যানবাহন শুণ‌্য ফেরি ঘা‌ট

ভোগান্তির যেন শেষ নেই। জানাগেছে, রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলা সাথে পাবনা ও কুষ্টিয়া জেলার মানুষের যোগাযোগের সহজ মাধ্যম হাবাসপুর-সাতবাড়িয়া নৌরুট। প্রতিদিন এই নৌরুট দিয়ে ৫ থেকে ৭ হাজার মানুষ যাতায়াত করে।

যাদের পারাপারের ভরসা ইঞ্জিন চালিত নৌকা আর ঘাটে যেতে হয় ঘোরার গাড়ি নয়তো পায়ে হেটে। শনিবার দুপুরে সরেজমিনে দেখাযায়, মূল সড়ক থেকে ধু ধু বালির মধ্য দিয়ে পায়ে হেটে ওপার থেকে মাথায় মাছের ঝাকা নিয়ে এপারে আসছেন পাবনা জেলার জেলেরা।

আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে বিএনপির অনেকেই অংশ নেবে : কাদের

আবার কিছু সময় পর পর ১০ থেকে ১৫ জন করে যাত্রি নিয়ে ছেড়ে যাচ্ছে ঘোড়ার গাড়ি। এ সময় পাবনা জেলার জেলে নিমাই চন্দ্র কর বলেন, আমরা সারা বছর পদ্মায় মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করি। সেই মাছ হাবাসপুর ঘাট দিয়ে পার হয়ে এপারে এসে পাংশা, রাজবাড়ীসহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করি।

রাজবাড়ীতে বাসের ধাক্কায় অটোযাত্রী গৃহবধু ও শশুরের মৃত্যু

কিন্তুু এতটুকু রাস্তা ঘোড়ার গাড়িতে ভাড়া দিতে হয় ৫০ টাকা করে। আবার ইঞ্জিন চালিত ট্রলারে ভাড়া দিতে হয় ৫০ টাকা করে। যা আমাদের জন্য কষ্টকর।

কষ্ট হলেও আমরা পায়ে গেটে এপারে বাজারে আসি। রাজবাড়ীর হাবাসপুর ঘাট দিয়ে পাবনা যাওয়া যাত্রি আল আমিন হোসেন
বলেন, রাজবাড়ী থেকে পাংশা ও কালুকালীর মানুষের পাবনা ও কুষ্টিয়া যাওয়ার দ্রুততম ও সহজ পথ এই নৌরুট।

এই নৌরুট ছাড়া সড়ক পথে পাবনায় গেলে অন্তত ২০০ কিলোমিটার পথ বেশি ঘুরে যেতে হয়। তাই বেশি ভাড়া ও কষ্ট হলেও মানুষ এই নৌরুট ব্যাবহার করে। ভাড়া কমানোর ব্যপারে প্রশাসন কোন পদক্ষেপ নেয় না।

পাংশায় দুবাই প্রবাসী স্বামীর পরিকল্পনায় ২লক্ষ টাকা চুক্তিতে স্ত্রীকে হত্যা ॥ একজন গ্রেপ্তার

পাবনা থেকে রাজবাড়ী আসা যাত্রি খায়ের মোল্লা বলেন, বাড়তি ভাড়া আদায় তো আছেই সংযোগ সড়ক না থাকায় নষ্ট হচ্ছে মালামাল।

ঘোড়ার গাড়িতে যাটে পৌছাতেই অসুস্থ্য হয়ে পরতে হচ্ছে, দেখার যেন কেউ নেই। আবার বিকেলের পর ঘাটে থাকে না ট্রলার। কেউ অসুস্থ্য হয়ে পরলে হাসপাতালে নেওয়ারও উপায় নেই। নেই যাত্রি ছাউনি ও বিশুদ্ধ পানি খাবার ব্যাবস্থা।

এত কষ্ট আর ভোগান্তির মধ্যে যাতায়াত করছে মানুষ। একতাবদ্ধ হয়ে ঘোড়ার গাড়ি পরিচালনা করতে দেখা গেছে ঘাট এলাকায়। দিন শেষে সবার আয় একত্র করে সমানভাবে ভাগ করে নিচ্ছেন ঘোড়ার গাড়ির চালকেরা।

রাজবাড়ীতে বাসের ধাক্কায় অটোযাত্রী গৃহবধু ও শশুরের মৃত্যু

ঘোড়ার গাড়ির চালক মোকবুল মিয়া বলেন, হাবাসপুরে ঘাটে ১৫ থেকে ২০ টি ঘোড়ার গাড়ি রয়েছে। যার যার মত ভাড়া আদায় করলে একে অপরের সাথে ঝগড়া শুরু হয়। তাই দিন শেষে সবার টাকা একত্র করে সমানভাবে ভাগ করে নেওয়া হয়।

এতে এক এক জন দৈনিক ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকায় আয় করছে। তবে এই সাড়ে চার কিলোমিটার পথে ইট বিছিয়ে দেওয়া হলেও সবার জন্য ভালো হবে বলে জানান তিনি।

বাড়তি ভাড়া নেওয়ার বিষয়ে হাবাসপুর ঘাটের ইজারাদার পরেশ চন্দ্র দাস বলেন, তেলের দাম বৃদ্ধির কারনে আমরা ৫০ টাকা করে ভাড়া নিচ্ছি। আর মোটর সাইকেল পার করলে ১০০ টাকা।

আবার দুই একজনের কাছে টাকা না থাকলে তাকেও পার করে দিচ্ছি। এত সামান্য নদী পথে ৫০ টাকা বেশি কিনা জানতে চাইলে কোন উত্তর না দিয়ে চলে যান তিনি।

পদ্মলোচন ঠাকুরের ২৯০ তম তিরোধান দিবসে বালিয়াকান্দির নলিয়ায় গঙ্গান

অচিরেই এই নৌরুটে যাতায়াতের ভাড়া কমানো ও সংযোগ সড়কের ব্যাবস্থা হবে এমনটাই আশা হাবাসপুর ও সাতবাড়িয়া চরাঞ্চলের হাজার হাজার মানুষের।

যদিও পাংশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ জাফর সাদিক চৌধুরী বলেন, হাবাসপুর-সাতবাড়িয়া নৌরুটের সংযোগ সড়ক না থাকায় ভোগান্তির বিষয়টি জেনেছেন। তাছাড়া যাত্রি ভোগান্তি লাঘবে একটি যাত্রি ছাউনি ও বিশুদ্ধ পানির ব্যাপারে তদন্ত করে ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে। পাশাপাশি বাড়তি ভাড়ার বিষয়টিও গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে।

shoberkotha

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version