লক্ষ্মীপুরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং সেই আন্দোলনে গুলিতে নিহত শিক্ষার্থী সাদ আল আফনান পাটওয়ারীর মরদেহ উত্তোলন একটি আলোচিত ঘটনা। বৈষম্যের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা রাজপথে নামলে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের আক্রমণে রক্তাক্ত সংঘর্ষ ঘটে, যার ফলে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।মামলার তদন্তের জন্য আদালতের নির্দেশে দাফনের ৩০ দিন পর তার মরদেহ উত্তোলন করেছে প্রশাসন।

ঝিনাইদহে অনলাইনে শিক্ষক বদলী জালিয়াতির তদন্ত শুরু ফেঁসে যাচ্ছেন দুই কর্মকর্তাসহ বদলী বানিজ্যের হোতারা

এর আগে ৫ আগস্ট আফনানের মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন করা হয়েছিল।এতে মামলার তদন্তের স্বার্থে মরদেহ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেন আদালত।

২০২৪ সালের ৪ আগস্ট, লক্ষ্মীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন অনুষ্ঠিত হয়। মাদাম ব্রিজ-ঝুমুর এলাকায় আয়োজিত এই আন্দোলনে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ এবং ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ছাত্রদের ওপর আক্রমণ করে। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে গুলির ঘটনা ঘটে, যেখানে সাদ আল আফনানসহ আরো কয়েকজন শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হয়। আফনান ঘটনাস্থলেই নিহত হয়।

সংযুক্ত আরব আমিরাতে সাজাপ্রাপ্ত ৫৭ জন বাংলাদেশি সম্প্রতি ক্ষমা পেয়েছেন

আফনান লক্ষ্মীপুর ভিক্টোরিয়া কলেজের একজন এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিল এবং তার বাড়ি ছিল পৌর শহরের বাস টার্মিনাল এলাকার আরমানি মিঝি মসজিদ এলাকায়। তাকে ময়নাতদন্ত ছাড়াই ৫ আগস্ট দাফন করা হয়েছিল।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মীর মেজবাহীজ্জুলাম চৌধুরী ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কামাল হোসেন। ময়নাতদন্ত শেষে তাদের তত্ত্বাবধানেই আফনানের মরদেহ ফের দাফন করা হবে।

সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন এবং এ কে এম শহীদুল হককে গ্রেপ্তার

তবে, ১৪ আগস্ট তার মা নাছিমা আক্তার বাদী হয়ে ৭৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় ৬০০ জনকে আসামি করে সদর মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয় সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি এ কে এম সালাহ উদ্দিন টিপুকে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মীর মেজবাহীজ্জুলাম চৌধুরী ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কামাল হোসেন। ময়নাতদন্ত শেষে তাদের তত্ত্বাবধানেই আফনানের মরদেহ ফের দাফন করা হবে।

 

আদালতের নির্দেশে ৫ সেপ্টেম্বর, দাফনের ৩০ দিন পর সাদ আল আফনানের মরদেহ উত্তোলন করা হয়। উত্তোলনের সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মীর মেজবাহীজ্জুলাম চৌধুরী এবং মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কামাল হোসেন। মরদেহ ময়নাতদন্তের পর আবারো পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।

বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ধরনের বৈষম্য এবং অবিচারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে আসছে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনগুলোর মধ্যে অধিকাংশই শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে সংঘটিত হয়, যেখানে মূলত সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক বৈষম্যগুলোকে তুলে ধরা হয়।

 

২০২৪সালের ৪ আগস্টের আন্দোলনটি মূলত সরকারি দলে নেতৃত্বাধীন বৈষম্য এবং শিক্ষার্থীদের অধিকারের সুরক্ষা না থাকা নিয়ে শুরু হয়েছিল। শিক্ষার্থীদের দাবি ছিল যে, সামাজিক এবং শিক্ষাক্ষেত্রে তাদের জন্য ন্যায্যতা নিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু, এই আন্দোলন সহিংসতার রূপ নেয় যখন রাজনৈতিক দলের কর্মীরা তাদের ওপর আক্রমণ চালায়।

১৪ আগস্ট রাতে আফনানের মা নাছিমা আক্তার বাদী হয়ে ৭৫ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতপরিচয় ৬০০ জনকে আসামি করে সদর মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি এ কে এম সালাহ উদ্দিন টিপুকে প্রধান আসামি করা হয়।

সাদ আল আফনান ছাড়াও ওইদিন আরো তিনজন শিক্ষার্থী নিহত হয়। তাদের মধ্যে সাব্বির হোসেন রাসেল এবং ওসমান গণির মরদেহও আদালতের নির্দেশে উত্তোলন করা হয় এবং ময়নাতদন্ত শেষে পুনরায় দাফন করা হয়।

shoberkotha

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version