সিলেটের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ শিশুর চরম কষ্ট: মায়ের বুকফাটা আর্তনাদ

১২ বছর বয়সী শফিক আলী সিলেটের আখালিয়া এলাকায় পুলিশের সঙ্গে ছাত্র-জনতার সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। শুক্রবার বিকেলে সংঘর্ষের সময় শফিক তার বাবার সাথে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ফিরে আসছিল। মদিনা মার্কেট এলাকায় পৌঁছানোর পর সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন এবং রিকশাচালক তাকে নামিয়ে দেন। এ সময় পুলিশের গুলিতে শফিক গুরুতর আহত হন এবং মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।

মাউন্ট এডোরা হাসপাতালে শফিকের অবস্থা অত্যন্ত হৃদয়বিদারক। তার শরীরে অসংখ্য ছররা গুলি লেগেছে এবং তার গেঞ্জির উপর রক্তের দাগ এবং ছিদ্র রয়েছে। শফিকের মা, আরফিনা বেগম, হাসপাতালের বিছানার পাশে বসে চোখের পানি ফেলছেন। তিনি বলছেন, “আমার ছেলের শরীর পুরোপুরি ক্ষতবিক্ষত হয়ে গেছে।” আরফিনা গৃহপরিচারিকার কাজ করে দিনযাপন করেন এবং তার ছেলে দৈনিক ৫০ টাকা বেতনে কাজ করতো। তাদের সামান্য আয় দিয়ে সংসার চলে, কিন্তু শফিকের চিকিৎসার খরচ মেটানো তাদের জন্য এক বিরাট চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

শফিকের গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর প্রথম পেয়ে, আরফিনা ফেসবুকে তার ছেলের ছবি দেখে তার অবস্থা সম্পর্কে জানতে পারেন। পরে তিনি হাসপাতালে ছুটে যান। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, শফিকের চিকিৎসা চলছে এবং বর্তমানে সে আশঙ্কামুক্ত। তবে, তার শরীরে কতগুলি গুলি লেগেছে তা এখনও গণনা করা সম্ভব হয়নি।

এদিকে, সিলেট মহানগর পুলিশের উপকমিশনার মো. আজবাহার আলী শেখ বলেন, শিশুর শরীরে কার গুলি লেগেছে তা তদন্তের বিষয়। এ ঘটনার ব্যাপারে পুলিশ যথাযথ তদন্ত করবে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেবে।

এই ঘটনা আমাদের সামনে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তুলে ধরে: সংঘর্ষের সময় নিরীহ নাগরিকদের নিরাপত্তা কিভাবে নিশ্চিত করা যায়? শফিক এবং তার পরিবারের কষ্টের পরিপ্রেক্ষিতে, সমাজ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জন্য এটি একটি গুরুতর বিষয়।

কিন্তু, এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করতে আমাদের সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে।

Shober Kotha

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version