রাজশাহীতে মতিহার থানায় হামলার চেষ্টা: শিক্ষকদের সহায়তায় আন্দোলনকারীদের সরে যাওয়ার ঘটনা

আজ রোববার দুপুরে রাজশাহীর মতিহার থানায় হামলার চেষ্টা চালানো হয়েছে, তবে থানায় তেমন বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। হামলার সময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক সেখানে উপস্থিত ছিলেন এবং তারা আন্দোলনকারীদের থানার বাইরে ফিরিয়ে আনেন।

মোহনপুর থানায় আগুন দেওয়া হয়

এর আগে বেলা একটার দিকে রাজশাহীর মোহনপুর থানায় আগুন দেওয়া হয়। এই হামলার ফলে থানা-সংলগ্ন দোকানপাট, উপজেলা ভূমি কার্যালয় এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আগুন লেগেছে।

আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভ ও হামলা

প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, আন্দোলনকারীরা বেলা ১১টার পর নগরের তালাইমারী মোড় থেকে ভদ্রা মোড় পর্যন্ত মিছিল করেন। বেলা দেড়টার দিকে তারা পুনরায় তালাইমারী মোড়ে ফিরে এসে মতিহার থানায় ইট-পাটকেল ছুড়তে শুরু করেন। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে পুলিশ সদস্যরা থানার ভেতরে আশ্রয় নেন।

শিক্ষকদের সহায়তায় পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আসাবুল হক জানান, হামলার সময় সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা আন্দোলনকারীদের শান্ত করতে এবং থানার বাইরে ফিরিয়ে নিয়ে আসতে সহায়তা করেন। প্রক্টর বলেন, “যাঁরা থানায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেছেন, তাঁদের মধ্যে কোনো ছাত্রকে দেখা যায়নি। তাঁরা স্থানীয় আন্দোলনকারী হতে পারেন।”

আহত ছাত্রদের অবস্থা

আন্দোলনকারী ছাত্ররা অভিযোগ করেছেন যে পুলিশ তাঁদের ওপর রাবার বুলেট ছুড়েছে, এতে তিনজন ছাত্র আহত হয়েছেন। তাঁদের একজনের চোখে আঘাত লেগেছে এবং সকলকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মুখপাত্র শঙ্কর কে বিশ্বাস জানান, মুসাব্বির (২১) নামে একজন ভর্তি হয়েছেন। তাঁর আঘাতের প্রকৃতি দেখে প্রাথমিকভাবে রাবার বুলেটের আঘাত মনে হয়নি। আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বিস্তারিত জানা যাবে।

আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের প্রতিক্রিয়া

মতিহার থানায় হামলার খবর পেয়ে, সাহেব বাজার জিরো পয়েন্ট থেকে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা তালাইমারীর দিকে রওনা দেন। আন্দোলনকারীদের সড়ে যাওয়ার জন্য তারা রিকশাচালকদের মাধ্যমে খবর পান এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে পৌঁছান। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা আন্দোলনকারীদের নগরের বিনোদপুর পর্যন্ত ধাওয়া করেন।

আন্দোলনের বর্তমান পরিস্থিতি

বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন জানিয়েছেন, বেলা একটায় তাঁদের পরিকল্পিত কর্মসূচি শেষ হয়েছে। তারপরে ঘটে যাওয়া সহিংসতা ছাত্রদের কর্মকাণ্ড নয় বলে তিনি দাবি করেন। আহতদের বিষয়ে তিনি আরও তথ্য সংগ্রহ করবেন বলে জানিয়েছেন।

Shober Kotha

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version