কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে তরুণদের কাছে ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী পলক

কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে যদি কোনো ভুল করে থাকেন, তাহলে তরুণ প্রজন্মের কাছে আন্তরিকভাবে ক্ষমা চেয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। শুক্রবার বিকেলে নাটোরে নিজ বাসভবনে অনুষ্ঠিত জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এ আহ্বান জানান।

বিবৃতিতে, প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ বলেন, “যদি তরুণ প্রজন্মের প্রতি আমার কোনো ভুল হয়ে থাকে, আমি দুঃখিত। আমি স্বীকার করি, ইন্টারনেট সেবা ব্যাহত হওয়া এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব প্রতিরোধে ব্যর্থ হওয়ার দায় আমার ওপর রয়েছে। আমি যেকোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য প্রস্তুত আছি এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত।”

তিনি আরও জানান, “যদি আমাদের অবহেলার কারণে তরুণ প্রজন্মের মনে কোনো ক্ষোভ সৃষ্টি হয়, তাহলে আমরা সেই দায় স্বীকার করে শাস্তি মেনে নিতে প্রস্তুত। তবে, যদি আমাদের ব্যর্থতার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে দোষারোপ করা হয়, সেটা আমাদের জন্য অত্যন্ত কষ্টের। আমি প্রধানমন্ত্রীকে বিষয়টি সঠিকভাবে বোঝার আহ্বান জানাচ্ছি।”

প্রতিমন্ত্রী মন্তব্য করেন, “সরকারের সঙ্গে ছাত্রছাত্রীদের যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে, সেটি তাঁদের দায় নয়, আমাদের দায়। আমাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে ব্যর্থ হওয়ায় এ দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে। এই ব্যর্থতা কোনোভাবেই এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই।”

তিনি উল্লেখ করেন, “এই দূরত্ব দূর করার জন্য কঠোর পদক্ষেপ নয়, বরং সঠিক ও সংবেদনশীল সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন। আমরা যদি ছাত্রছাত্রীদের সাথে সংবেদনশীলভাবে কথা বলি, তাঁদের সমস্যার সমাধানে মনোযোগ দিই, তাহলে এই ভুল বোঝাবুঝি ও দূরত্ব দ্রুত দূর হবে এবং ষড়যন্ত্রকারীদের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হবে।”

শোকসভায় বক্তৃতার শুরুতে, জুনাইদ আহমেদ বলেন, “আমরা এমন একটি সময় শোকসভা ও আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করছি যখন দেশের শিশু-কিশোর ও ছাত্রছাত্রীরা একটি আন্দোলনে লিপ্ত। এই সময়েই স্বাধীনতাবিরোধী ও দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রকারীরা বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে।”

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, “শিক্ষার্থীরা তাদের কোটাবিরোধী আন্দোলন শান্তিপূর্ণভাবে পরিচালনা করেছে। কোথাও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, আওয়ামী লীগ বা ছাত্রলীগ তাদের ওপর আঘাত করেনি। পুলিশও কোনো শক্তি প্রয়োগ করেনি। কিন্তু বিএনপি-জামায়াত ও অন্যান্য সন্ত্রাসী গোষ্ঠী মিথ্যা গুজব ছড়িয়ে অশান্তি সৃষ্টি করার চেষ্টা করেছে।”

তিনি জোর দিয়ে বলেন, “যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে, সেটি আমাদের নিজেদের উদ্যোগে দূর করতে হবে। ছাত্রছাত্রীদের অনুভূতি ও চাহিদা বুঝতে হবে এবং তাঁদের মনের কথা শোনার চেষ্টা করতে হবে।”

কোটা সংস্কার আন্দোলনের ফলে সারা দেশে ইন্টারনেট বিচ্ছিন্ন থাকার বিষয়টি উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “যদি ইন্টারনেট সেবা ব্যাহত হওয়ার জন্য কোনো দায় থাকে, তা আমি নিজেই গ্রহণ করি। আমি দায়ী, কারণ আমি ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী। যদি আমার ব্যর্থতার জন্য শাস্তি হয়, তাহলে আমি সেটি মেনে নিতে প্রস্তুত। তবে কেন প্রধানমন্ত্রীকে দোষারোপ করা হচ্ছে, তা আমি বুঝি না।”

শেষে, তিনি বলেন, “বাংলাদেশে কিছু মুখোশধারী ও চক্রান্তকারী গোষ্ঠী সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। এই ষড়যন্ত্রের প্রকৃতি উদ্ঘাটনে সময় লাগবে।”

Shober Kotha

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version