কালীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স চালকের বিরুদ্ধে নিয়মিত ডিউটি না করার অভিযোগ, জরুরী সেবা সথেকে বঞ্চিত মুমূর্ষ রোগীরা

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স চালক সহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে সরকারি নিয়ম না মেনে ডিউটি না করার অভিযোগ উঠেছে। এই কারণে, জরুরি স্বাস্থ্য সেবা প্রাপ্তিতে মারাত্মক সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে, এবং মুমূর্ষ রোগী ও তাদের স্বজনরা কষ্টের মুখোমুখি হচ্ছেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জেলা শহর বা বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা রোগীদের বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স বা মাইক্রোবাস ব্যবহার করতে হচ্ছে, যা সাধারণত সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের তুলনায় দ্বিগুণ ভাড়ায় হয়ে থাকে।

অ্যাম্বুলেন্স চালকের অনিয়ম:

সরোজমিনে গিয়ে অ্যাম্বুলেন্স চালক সহিদুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করতে চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। হাসপাতালের এক কর্মচারী জানান, সহিদুল ইসলাম নিয়মিত ডিউটি করেন না এবং যেদিন তিনি হাসপাতালে আসেন, সেদিন বিকাল ৩টার পর ঝিনাইদহ চলে যান। বিকাল ৩টার পর তার আর উপস্থিতি থাকে না, ফলে সরকারি অ্যাম্বুলেন্স সেবা থেকে রোগীরা বঞ্চিত হচ্ছেন।

রোগী পরিবহন সমস্যা:

কালীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে গুরুতর রোগীদের স্থানান্তরের জন্য তাদেরকে ঝিনাইদহ, ফরিদপুর, খুলনা, যশোর ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ধরনের রোগীদের পরিবহনের জন্য স্বজনরা প্রাইভেট অ্যাম্বুলেন্স বা ভাড়ায় চালিত মাইক্রোবাস খোঁজেন, যার কারণে সরকারি ভাড়ার তুলনায় অনেক বেশি অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে। এতে করে গরিব ও অসচ্ছল রোগীরা অতিরিক্ত অর্থ খরচের কারণে আরও বেশি কষ্টে পড়ছেন।

অ্যাম্বুলেন্স চালকের বক্তব্য:

অ্যাম্বুলেন্স চালক সহিদুল ইসলাম অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমি প্রতিদিন ঝিনাইদহে যাই না, মাঝে মাঝে যাই। তবে বিকাল ৩টার পর যাই না, আরও পরে যাই।” তিনি এও জানান, হাসপাতালের অন্য একজন ড্রাইভার উপস্থিত থাকলে তিনি ঝিনাইদহে যান। টিএইচএ সাহেবের ড্রাইভার অ্যাম্বুলেন্স চালানোর নিয়ম সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান এবং সরাসরি কথা বলেন।

প্রশাসনিক প্রতিক্রিয়া:

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডা. শিশির কুমার বলেন, “অ্যাম্বুলেন্স চালক সহিদুল ইসলামের অনিয়মিত ডিউটির অভিযোগ আমাদের কাছে এসেছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আলমগীর হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে, তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইশরাত জাহান জানান, “বিষয়টি আমি খোঁজ নিয়ে দেখব। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

এই সমস্যা সমাধানের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন। সরকারি সেবা নিশ্চিত করা ও রোগীদের প্রতি ন্যায্য সুবিধা প্রদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

Shober Kotha

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version