বসির আহাম্মেদ, ঝিনাইদহ- দির্ঘ ৯ বছরেও পূর্ণতা পায়নি ঝিনাইদহ সরকারি বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধি আবাসিক বিদ্যালয়টি। সরকারি প্রতিষ্ঠান হলেও স্কুলটি চলে বেসরকারি শিক্ষক দিয়ে।

৯টি পদের বেশির ভাগই শুন্য। শিক্ষক না থাকায় অভিভাবকদের আগ্রহ নেই তাদের প্রতিবন্ধি সন্তানের ভর্তি করার। এ কারণে বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে ১’শ টি আসনের বিপরীতে ভর্তি আছে মাত্র ৪৭ জন শিক্ষার্থী। বাকী ৫৩টি আসন বছরের পর বছর খালি থাকে।

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ৩ দিন ব্যাপী কৃষি মেলার উদ্বোধন

তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ২০০৬ সালের ৮ এপ্রিল ঝিনাইদহ পৌর এলাকার মহিষাকুন্ডু গ্রামে ৯ বিঘা জমির উপর খুলনা বিভাগের একমাত্র সরকারি বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধি আবাসিক বিদ্যালয়টির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ভবনটি নির্মাণে গনপূর্ত বিভাগের ব্যায় হয় চার কোটি ১৮ লাখ টাকা।

ঝিনাইদহ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মসিউর রহমান এই প্রতিষ্ঠানটি স্থাপনে মূখ্য ভুমিকা পালন করেন। বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী শিশুদের গার্মেন্টস এন্ড এ্যাম্বোর্ডারী, ফেন্সী উড ওয়ার্কসহ চার বিষয়ে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে স্বাবলম্বী করার উদ্যোগ গ্রহন করা হয়।

ফলোআপ—— শৈলকুপা থানায় হামলার ঘটনায় মামলা, গ্রেফতার ১৫

এখানে আবাসিক ও একাডেমিক মিলিয়ে রয়েছে মোট ৫ টি ভবন। এর মধ্যে লোকবল না থাকায় স্টাফ কোয়াটার ও অফিসার্স কোয়াটার পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। ভবন দুইটির জানালা, দরজা ও ইলেক্ট্রনিক পরিস্থিতি নাজুক। ঘাস জঙ্গলে ভবন দুইটি ঘিরে ধরেছে। পরিস্কারের উদ্যোগ নেই।

ভবন দুইটির জানালা, দরজা ও ইলেক্ট্রনিক পরিস্থিতি নাজুক। ঘাস জঙ্গলে ভবন দুইটি ঘিরে ধরেছে।

এদিকে ২০১৫ সালে জোড়াতালি দিয়ে সরকারি বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধি আবাসিক বিদ্যালয়টি শুরু হলেও ২০২০ সাল থেকে প্রতিবন্ধি শিক্ষার্থীদের ভর্তি করানো শুরু হয়। কিন্তু তাদের পড়ানোর কোন শিক্ষক নেই। বাইরে থেকে তিনজন শিক্ষককে ভাড়া করে পড়ানো হচ্ছে। এরমধ্যে শিখা খাতুন প্রতিবন্ধী শিশুদের গার্মেন্টস এন্ড এ্যাম্বোর্ডারী ও শিল্পী খাতুন সাধারণ শিক্ষা দিচ্ছেন।

ঝিনাইদহে বিপুল পরিমাণ ফেন্সিডিলসহ ২ জন আটক, সবজি বোঝায় ট্রাক জব্দ

স্কুলের কারিগরী প্রশিক্ষক হেলেনা শবনম জানান, ঝিনাইদহ সরকারি বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধি আবাসিক বিদ্যালয়টিতে প্রধান শিক্ষক, হাউজ প্যারেন্ট, সাধারণ শিক্ষক, হিয়ারিং এইড টেকনিশিয়ান ও কারিগরী প্রশিক্ষক পদে কোন লোক নেই। ফলে অভিভাবকদের তাদের সন্তান ভর্তি কররাতে কোন আগ্রহ নেই।

তিনি আরো জানান, এই দুর্মুল্যের বাজারে শিক্ষার্থী প্রতি অপ্রতুল বরাদ্দ। প্রতি মাসে শিক্ষার্থী প্রতি মাথাপিচু বরাদ্দ মাত্র ৩ হাজার টাকা। এই টাকায় নিয়ম মাফিক ভাবে শিক্ষার্থীদের মাছ, মাংশ ও ডিম খাওয়াতে হচ্ছে। এক’শ শিক্ষথর্িী ভর্তি থাকলে প্রাপ্ত বরাদ্দ থেকে কিছুটা হলেও মানিয়ে নেওয়া সম্ভব হতো বলে তিনি মনে করেন।

১৯ বছরে যায়যায়দিন ঝিনাইদহে কেক কাটা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

এদিকে আউটসোসিংয়ে নিয়োগকৃত দুইজন বাবুর্চি, দুইজন নিরাপত্তাপ্রহরী, এক মালি ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী ৬ মাসেও বেতন পায়নি। বেতন না পাওয়ায় তারা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। ঢাকার গলফ সিকিউরিটি সার্ভিস তাদের নিয়োগ দিয়েছিলেন বলে বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধি আবাসিক বিদ্যালয়য়ের বাবুর্চি আইয়ূব হোসেন ও শাহানাজ পারভীন জানান।

প্রতিষ্ঠানের অফিস সহকারী আসাদুজ্জামান জানান, লোকবলের অভাবে সরকারি এই প্রতিষ্ঠানটি খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে। অথচ পুর্ণাঙ্গভাবে জনবল নিয়োগ দিলে এই অঞ্চলের প্রতিবন্ধি ছেলে মেয়েরা আত্মনির্ভরশীলতা ফিরে পেতো।

শিক্ষক আক্তার হুসাইনের স্কাউটসের সর্বোচ্চ অ্যাওয়ার্ড রৌপ্য ব্যাঘ্র পদক অর্জন

বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুল কাদের জানান, প্রতিষ্ঠানটি সচল রাখতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা লোকবলের জন্য প্রতিনিয়ত অধিদপ্তরকে চিঠি দিচ্ছি। তাছাড়া আউটসোসিংয়ে নিয়োগকৃতদের বেতনের জন্য একাধিকবার চিঠি দেওয়া হয়েছে। হয়তো অচিরেই সমাধান হয়ে যাবে।

shoberkotha

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version