সরকারের তদন্ত কমিশনের পরিধি ও সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধির

নতুন সিদ্ধান্তের প্রেক্ষাপট

কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রেক্ষিতে সারা দেশে যে সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের তদন্ত কমিশনের কার্যপরিধি সম্প্রসারিত করা হয়েছে। হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারপতির নেতৃত্বে গঠিত এই কমিশনের সদস্য সংখ্যা বাড়িয়ে তিন জন করা হচ্ছে।

আইনমন্ত্রীর ঘোষণাঃ

আজ, মঙ্গলবার বিকেলে সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এই সিদ্ধান্তের বিস্তারিত ঘোষণা দেন। তিনি জানান, কমিশনের কার্যপরিধি ২১ জুলাই পর্যন্ত সংঘটিত সকল ঘটনা তদন্ত করতে সম্প্রসারিত করা হয়েছে। বর্তমানে, কমিশনের কাজের পরিধি ও তদন্তের ক্ষেত্র বাড়ানো হয়েছে। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, কমিশন এখন থেকে নতুন সময়সূচিতে কাজ করবে এবং তিন সদস্যের নতুন কমিটি গঠিত হবে।

মন্ত্রিপরিষদের সভা:

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক, তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী—এই সব মন্ত্রী সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় অংশ নেন। সভায় পররাষ্ট্রসচিব, জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব, সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।

পূর্ববর্তী কমিশনের কার্যক্রম:

সরকার ১৮ জুলাই একটি এক সদস্যের তদন্ত কমিশন গঠন করেছিল, যার নেতৃত্বে ছিলেন হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামান। ওই কমিশন ১৬ জুলাইয়ের সহিংসতা ও মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধান করার দায়িত্বে ছিল। কমিশনকে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছিল।

ঝিনাইদহে কোটা বিরোধীদের পদযাত্রা ও সমাবেশ

সংঘাতের ভয়াবহতা:

কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এবং হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। সরকারের হিসাব অনুযায়ী, ১৫০ জনের মৃত্যু ঘটেছে। কিন্তু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হিসাব অনুযায়ী, এ সংখ্যা ২৬৬। ২৭ জুলাই রাতে সাংবাদিকদের পাঠানো তালিকা অনুযায়ী, ৬৬ জনের পরিচয় উল্লেখ করা হয়নি। প্রথম আলোর তথ্য মতে, ২৯ জুলাই পর্যন্ত ২১১ জনের মৃত্যু হয়েছে।

কমিশনের নতুন পরিকল্পনা:

কমিশনের কার্যপরিধি বৃদ্ধি ও সদস্য সংখ্যা বাড়ানোর মাধ্যমে সরকারের উদ্দেশ্য হলো সহিংসতা ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের ব্যাপক তদন্ত করা এবং দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা। তিন সদস্যের কমিশন এই কাজটি আরো কার্যকরভাবে সম্পাদন করতে সক্ষম হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সার্বিক প্রেক্ষাপট:

এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সরকার কোটা সংস্কার আন্দোলনের সহিংসতা ও সংঘাতের বিষয়টি আরো গভীরভাবে তদন্ত করবে এবং জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই পদক্ষেপগুলি সরকারের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা এবং জনগণের স্বার্থে প্রয়োজনীয় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।কালীগঞ্জে ফেন্সিডিলসহ মাদক ব্যবসায়ী আটক

এই নতুন সিদ্ধান্তগুলির মাধ্যমে সরকার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দায়ী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা ফেরানোর একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

Shober Kotha

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version