দেশের প্রতিটি আনাচকানাচে অপরাধীদের খুঁজে বের করে বিচারের মুখোমুখি করুন: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি-জামায়াত ও শিবির দেশের উন্নয়নকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে এবং বিদেশে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে পরিকল্পিতভাবে তাণ্ডব চালিয়েছে। তিনি এই ধ্বংসযজ্ঞে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচারের আওতায় আনার জন্য দেশবাসীর সহযোগিতা কামনা করেছেন।
শেখ হাসিনা রামপুরার বাংলাদেশ টেলিভিশন ভবন (বিটিভি) পরিদর্শনকালে বলেন, মেট্রোরেল, বিটিভিসহ বিভিন্ন স্থাপনা ধ্বংস করা হয়েছে। তিনি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান, যারা এ ধ্বংসযজ্ঞে জড়িত, তাদের খুঁজে বের করে শাস্তির ব্যবস্থা করতে।
এমপি আনার হত্যার আসামী বাবুকে নিয়ে মোবাইল উদ্ধারে ঝিনাইদহে অভিযান চলছে.
বৃহস্পতিবার মিরপুর-১০ মেট্রোরেল স্টেশন পরিদর্শনের পর শুক্রবার বিটিভি ভবন পরিদর্শনে যান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ’৭১ সালের পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর তাণ্ডবের পুনরাবৃত্তি আমরা দেখছি। ২০১৩ সালে বিএনপি-জামায়াতের তথাকথিত আন্দোলনের সময় হাজার হাজার যানবাহন, ট্রেন, লঞ্চ, সরকারি স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ করা হয়েছিল। এবার কোটা সংস্কার আন্দোলনকে পুঁজি করে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এবার আগুন লাগাতে গানপাউডার ব্যবহার করা হয়েছে, যা দ্রুত সবকিছু পুড়িয়ে দিয়েছে। এমনকি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীও টেলিভিশনের ওপর হামলা চালায়নি, কিন্তু আজ এই টেলিভিশন সেন্টারও ধ্বংস করা হয়েছে। মেট্রোরেল ধ্বংস করে মানুষের দুর্ভোগ বাড়ানো হয়েছে। এদের লক্ষ্য আমাদের উন্নয়নকে থামিয়ে দেয়া।
তিনি বলেন, দেশের জনগণকেই এই ধ্বংসযজ্ঞের জন্য দায়ীদের শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। বিভ্রান্তি ও মিথ্যা অপপ্রচার থেকে সাবধান থাকতে হবে। যারা এসবের সাথে জড়িত, তাদের খুঁজে বের করতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশকে অনেক কষ্ট করে স্বাধীন করা হয়েছে এবং এখন বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল।বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। সেই মর্যাদাকে ধ্বংস করার জন্যই এই ধ্বংসযজ্ঞ।’
দুই টাকায় দুপুরের খাবার পথশিশু ও শ্রমজীবিদের মলিন মুখে তৃপ্তির হাসি
শেখ হাসিনা বিটিভির ধ্বংসযজ্ঞ আর পোড়া অবস্থা দেখে স্মৃতি রোমন্থন করে বলেন, ‘আজ অতীতের কথা মনে পড়ে, আমি কতবার এখানে এসেছি। প্রত্যেক নির্বাচনের আগে এখানে ভাষণ দিতে এসেছি। নানা অনুষ্ঠানে এসেছি। আজ যে ধ্বংসযজ্ঞ দেখলাম, এরপর এটা আবার কবে পুনরায় প্রতিষ্ঠা করা যাবে, জানি না।’
বিটিভির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনারা জীবনের ঝুঁকি নিয়েও অনেক চেষ্টা করেছেন। এই সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে পার পাওয়া অত্যন্ত কষ্টকর ছিল। তবু আপনারা এই জাতীয় সম্পদকে রক্ষার চেষ্টা করেছেন।
আজ সকাল ৯টা ১৩ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী বিটিভি ভবনে প্রবেশ করেন এবং কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রেক্ষিতে বিএনপি-জামায়াত চক্রের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত বিভাগগুলো পরিদর্শন করেন।
বিটিভি ভবনে পৌঁছেই ধ্বংসযজ্ঞ দেখে প্রধানমন্ত্রী হতাশ ও অসন্তুষ্ট হন। কর্মকর্তারা চোখের পানি ধরে রাখতে না পারায় পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে, তখন প্রধানমন্ত্রীকেও অশ্রুসিক্ত হতে দেখা যায়। ভাঙচুরের ঘটনাগুলোর একটি ভিডিও চিত্রও প্রধানমন্ত্রীকে প্রদর্শন করা হয়।
দেশের দক্ষিনাঞ্চলে রেণু পোনা উৎপাদনে এক সমৃদ্ধ ভান্ডার ঝিনাইদহের বলুহর কেন্দ্রীয় মৎস্য হ্যাচারি
বিটিভির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, তাণ্ডবে বিটিভির বিভিন্ন অবকাঠামো, সম্প্রচার সরঞ্জাম, নকশা বিভাগ, অফিস ভবন এবং বিভিন্ন কক্ষ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। সন্ত্রাসীদের তাণ্ডবে টেলিভিশন জাদুঘর, মুজিব কর্নার, মুক্তিযুদ্ধের স্মারক, প্রায় ৪০টি কম্পিউটার, ১০০টি টেলিভিশন সেট এবং কম্পিউটার ল্যাবের আসবাবপত্র, প্রশিক্ষণ কক্ষ এবং প্রিভিউ রুম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তিনটি তলায় আগুন দেওয়া এবং যন্ত্রাংশ লুটপাটের পাশাপাশি একটি সম্প্রচার ওবি ভ্যান, ১৭টি গাড়ি এবং ২১টি মোটরসাইকেলে আগুন ধরানো হয় এবং ৯টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়, ফলে সম্পূর্ণ স্থাপনার ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়।