বাংলাদেশে নবনিযুক্ত সুইডিশ রাষ্ট্রদূত নিকোলাস উইকস টেকসই উন্নয়নের পাশাপাশি সুইডেনের ব্যবসা সম্প্রসারণে বিশেষ আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। বুধবার (৩০ অক্টোবর) বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মো. জসিম উদ্দিনের সঙ্গে এক সৌজন্য সাক্ষাতে তিনি এ আগ্রহের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এ সাক্ষাতে পররাষ্ট্র সচিব নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূতকে তার দায়িত্বে নিয়োগের জন্য অভিনন্দন জানান এবং বাংলাদেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি সুইডেনের সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। সাক্ষাতে বাংলাদেশ-সুইডেন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের গভীরতা এবং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়।
ইসরায়েলের সাম্প্রতিক প্রতিশোধমূলক হামলা নিয়ে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে
পররাষ্ট্র সচিব শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকারের নীতিগত অবস্থান ও বিশ্বব্যাপী শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের অঙ্গীকার তুলে ধরেন। তিনি বলেন, সুইডেনের মতো উন্নত রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার ও সহযোগিতামূলক সম্পর্ক উন্নয়ন বাংলাদেশের উন্নয়নকল্পে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে। দুই দেশের মধ্যে পরিবেশ বান্ধব উন্নয়ন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, স্বাস্থ্য ও শিক্ষাখাতে ভবিষ্যৎ সহযোগিতা বাড়ানোর ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়।
রাষ্ট্রদূত নিকোলাস উইকস জানান, সুইডেন বাংলাদেশে তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণে আগ্রহী এবং টেকসই উন্নয়নে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে চায়। তার মতে, সুইডেনের অভিজ্ঞতা ও উন্নত প্রযুক্তি বাংলাদেশের উন্নয়নের বিভিন্ন খাতে বিশেষ অবদান রাখতে পারে।
বাংলাদেশে ব্যবসা ও বিনিয়োগের সুযোগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে সুইডেনের আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, স্থিতিশীল ব্যবসায়িক পরিবেশ এবং দ্রুত সম্প্রসারণশীল মধ্যবিত্ত শ্রেণী সুইডিশ কোম্পানিগুলোর কাছে বাংলাদেশকে আকর্ষণীয় বাজার হিসেবে তুলে ধরেছে। ফলে বাংলাদেশে বিভিন্ন খাতে সুইডেনের বিনিয়োগ সম্ভাবনার আলোচনা ক্রমেই জোরালো হচ্ছে।
বাংলাদেশ ও সুইডেনের মধ্যে ব্যবসায়িক সম্পর্ক অনেক বছর ধরেই বিদ্যমান, তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এ সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হয়েছে। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পে সুইডেনের বেশ কিছু নামীদামী ব্র্যান্ড ও কোম্পানি ক্রেতা হিসেবে জড়িত, যেমন এইচএন্ডএম (H&M)। এ ছাড়া সুইডেন বাংলাদেশে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি, স্বাস্থ্যসেবা, বিদ্যুৎ উৎপাদন ও টেলিকমিউনিকেশন খাতে বিনিয়োগের সুযোগ দেখছে। বিশেষ করে পরিবেশ-বান্ধব প্রযুক্তি ও টেকসই উন্নয়নের ক্ষেত্রে সুইডেন তার অভিজ্ঞতা ও সক্ষমতা কাজে লাগাতে চায়।
বাংলাদেশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে সুইডেনের সঙ্গে কাজ করার সুযোগকে গুরুত্ব দিচ্ছে। সুইডেন তার অত্যাধুনিক নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রযুক্তির জন্য বিশ্বব্যাপী সুপরিচিত এবং বাংলাদেশে পরিবেশ বান্ধব প্রযুক্তির চাহিদা ক্রমেই বাড়ছে। বাংলাদেশে সৌর শক্তি, বায়ু শক্তি এবং আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করার সম্ভাবনা সুইডেনের কোম্পানিগুলো দেখছে, যা দুই দেশের অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত উন্নয়নে সহায়ক হতে পারে।
ইসরায়েল শনিবার ইরানের সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে সুনির্দিষ্ট আক্রমণ শুরু করেছে।
বাংলাদেশে ডিজিটাল খাতের দ্রুত প্রসার সুইডেনের জন্য বিশেষ আকর্ষণীয়। এ খাতে সুইডেনের বৈশ্বিক সংস্থাগুলো, যেমন এরিকসন, তাদের কার্যক্রম সম্প্রসারণে আগ্রহী। বাংলাদেশের ডিজিটাল রূপান্তর ও টেলিকমিউনিকেশন সেক্টরে সুইডেনের বিনিয়োগ প্রযুক্তিগত জ্ঞান, উন্নত অবকাঠামো এবং দক্ষতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে। সুইডেনের আধুনিক প্রযুক্তি ও ডিজিটালাইজেশন অভিজ্ঞতা বাংলাদেশে টেকসই উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে পারে।
বাংলাদেশ সরকার সুইডেনের বিনিয়োগকারীদের জন্য একাধিক প্রণোদনা এবং বিনিয়োগবান্ধব নীতিমালা চালু করেছে। এসব উদ্যোগের মধ্যে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, বন্ডেড ওয়্যারহাউজ সুবিধা, কর রেয়াত এবং শুল্ক সুবিধা অন্তর্ভুক্ত। এ ছাড়া সুইডেনের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশ সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা করে চলেছেন, যা দুই দেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগের পথ সুগম করছে।
বাংলাদেশের ভোক্তা বাজার, ক্রমবর্ধমান অর্থনীতি এবং ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ সুইডেনের কোম্পানিগুলোর জন্য আকর্ষণীয় ক্ষেত্র তৈরি করেছে। স্বাস্থ্যসেবা, নির্মাণ, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, পরিবেশ প্রযুক্তি, এবং ডিজিটাল খাতের পাশাপাশি ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পেও সুইডেনের আগ্রহ ক্রমবর্ধমান।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারে মিডিয়া উপস্থাপনাঃ ট্রাম্প ও হ্যারিস টিমের জোর প্রতিযোগিতা
সুইডেন ও বাংলাদেশ দুই দেশই একে অপরের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে সহযোগিতা করতে আগ্রহী এবং এই অংশীদারিত্বের মাধ্যমে নতুন সম্ভাবনার দিক উন্মোচিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।