কালীগঞ্জে কৃষকদের জন্য দুই দিনের প্রশিক্ষণ কর্মশালা শেষ হয়েছে, যা জলবায়ু সহিষ্ণু এবং কার্যকরী কৃষি কৌশল ও পানি সাশ্রয়ী প্রকল্পের আওতায় আয়োজিত হয়। ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার জামাল ইউনিয়নের ২৫ জন কৃষক এই কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন। কর্মশালাটি সোনার বাংলা ফাউন্ডেশন আয়োজন করে এবং এতে উপস্থিত ছিলেন সোনার বাংলা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শিবুপদ বিশ্বাস। তিনি সভাপতিত্ব করেন কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠানে। এছাড়াও কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন কালীগঞ্জ উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহিন আলম।
পারিবারিক কলহের জেরে এক নারী তার স্বামীকে ৯ টুকরো করে সেপটিক ট্যাংকে মরদেহ উদ্ধার।
প্রশিক্ষণে মূলত ইরি ধানের ভেজা-শুকনা (অডউ) পদ্ধতির উপর জোর দেওয়া হয়। এটি একটি আধুনিক কৃষি পদ্ধতি যা পানি সাশ্রয় করে। কৃষকরা যাতে এই পদ্ধতি সঠিকভাবে প্রয়োগ করতে পারে, সেই বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করেন কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আক্তারুজ্জামান মিয়া। এছাড়াও সহকারি কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ইমদাদুল হাসান এবং জীবননগর কৃষি অফিসের সহকারি কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মতিয়ার রহমান তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন। বিএডিসি (সেচ) এর উপ-পরিচালক নিজাম উদ্দীনও এই প্রশিক্ষণে অংশ নেন এবং তিনি সেচ ও পানি সাশ্রয়ের বিষয়ে দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।
সোনার বাংলা ফাউন্ডেশন এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নে কাজ করছে জাপান ফান্ড ফর গ্লোবাল ইনভারমেন্ট এবং শেয়ার দ্যা প্লানেট অ্যাসোসিয়েশনের আর্থিক সহযোগিতায়। প্রকল্পটি কালীগঞ্জ উপজেলার চারটি ইউনিয়নে কার্যকরী হয়েছে। এই ইউনিয়নগুলো হলো: সুন্দরপুর-দুর্গাপুর, জামাল, কোলা, এবং নিয়ামতপুর। প্রকল্পটির লক্ষ্য হলো জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে অভিযোজিত কৃষি কৌশলসমূহের প্রচলন করা এবং পানি সাশ্রয়ী পদ্ধতির মাধ্যমে কৃষকদের উন্নত চাষাবাদে উৎসাহিত করা।
এ ধরনের প্রশিক্ষণ কর্মশালা কৃষকদের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ কারণ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে কৃষিতে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ দেখা দিচ্ছে। কৃষিক্ষেত্রে অনির্দিষ্ট আবহাওয়ার পরিবর্তন ও খরার প্রকোপের কারণে পানির ঘাটতি এক বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই পানি সাশ্রয়ী পদ্ধতি যেমন ভেজা-শুকনা চাষাবাদ (অডউ) কৃষকদের জন্য একটি কার্যকরী সমাধান হতে পারে। এই পদ্ধতিতে ধান চাষ করার সময় মাঠে জমা পানির স্তর নিয়ন্ত্রণ করে ধানের ফসল বৃদ্ধি করা হয়, যা পানির অপচয় রোধ করে।
ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের প্রজ্ঞাপন জারি
এ প্রশিক্ষণ কর্মশালার মাধ্যমে অংশগ্রহণকারী কৃষকরা আধুনিক প্রযুক্তি ও পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেয়েছেন এবং তাদের চাষাবাদে কীভাবে এই কৌশল প্রয়োগ করতে হবে সে বিষয়েও দক্ষতা অর্জন করেছেন। এছাড়াও, কৃষকরা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় নতুন ধারণা ও কৌশলগুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
এই কর্মশালা দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে প্রথম দিন তাত্ত্বিক আলোচনা এবং দ্বিতীয় দিন মাঠ পর্যায়ে প্রাকটিক্যাল কার্যক্রমের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। মাঠ পর্যায়ে প্রশিক্ষণের সময় কৃষকরা সরাসরি বিভিন্ন আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির ব্যবহার দেখতে পায় এবং নিজেরাই তা প্রয়োগের সুযোগ পান।
ঝিনাইদহে ধান ক্ষেতে পচন রোগ দেখা দিয়েছে, দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে ফলন কম হওয়ার আশংকা করছে কৃষক
সোনার বাংলা ফাউন্ডেশনের এই উদ্যোগ কৃষকদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে এবং তাদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। জলবায়ু সহিষ্ণু কৃষি কৌশলসমূহের প্রয়োগ শুধু কৃষকদের আয় বৃদ্ধি করবে না, বরং দেশের সামগ্রিক কৃষি উৎপাদনেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।