স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ফৌজদারি মামলায় এজহারভুক্ত আরও চার পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারের অনুমতি দিয়েছে। বৃহস্পতিবার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের উপ-সচিব আবু সাইদ স্বাক্ষরিত এক আদেশে এই অনুমতি প্রদান করা হয়। এই নির্দেশনার মাধ্যমে চার কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারের প্রক্রিয়া আরও এগিয়ে যেতে পারে। এর আগে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তিন ধাপে মোট ২৬ জন পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারের অনুমতি দিয়েছিল।
আওয়ামী লীগের নেতারা নারীদের প্রতি অসদাচরণ করতেন এবং তাদের ভোগের পণ্য হিসেবে দেখতেন।
এই গ্রেপ্তারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে ফৌজদারি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে, যেখানে এই কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। আদেশে বলা হয়েছে, ফৌজদারি মামলার আওতায় থাকা অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের জন্য অনুমতি দেওয়া হলো এবং পাশাপাশি এই প্রক্রিয়ার অগ্রগতি সম্পর্কে প্রতিবেদন প্রেরণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুলিশের উর্ধ্বতন এই কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে যে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে, তা তদন্তের অংশ হিসেবে গ্রেপ্তার প্রক্রিয়াকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
গ্রেপ্তারের অনুমতি পাওয়া চার পুলিশ কর্মকর্তা হলেন:
- অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পদোন্নতিপ্রাপ্ত) শাহেন শাহ্ মাসুদ
- অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পদোন্নতিপ্রাপ্ত) হাসান আরাফাত
- অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পদোন্নতিপ্রাপ্ত) জুয়েল রানা
- অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম
এই কর্মকর্তাদের প্রত্যেকেই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন এবং দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা মহানগর পুলিশের বিভিন্ন বিভাগে দায়িত্ব পালন করেছেন। শাহেন শাহ্ মাসুদ এবং হাসান আরাফাত ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগে কাজ করছিলেন। অন্যদিকে, জুয়েল রানা ডিপ্লোম্যাটিক সিকিউরিটি বিভাগে এবং রফিকুল ইসলাম গুলশান বিভাগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন।
এই গ্রেপ্তারের নির্দেশটি পুলিশের উপর একটি বড় আঘাত হিসেবে দেখা হচ্ছে। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার প্রক্রিয়া সাধারণত সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও যথাযথ তদন্তের ভিত্তিতে পরিচালিত হয়। এই ধরনের পদক্ষেপ সাধারণত একটি দীর্ঘ তদন্তের ফলাফল হিসেবে দেখা হয়, যেখানে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ার পরেই গ্রেপ্তারের অনুমতি দেওয়া হয়।
এর আগে তিন ধাপে ২৬ জন পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল, যা ইঙ্গিত দেয় যে তদন্তের পরিসর ও গভীরতা বাড়ছে। ফৌজদারি মামলাগুলোর পেছনে থাকা বিষয়গুলো এখনও বিস্তারিতভাবে প্রকাশ করা হয়নি, তবে এটি পরিষ্কার যে পুলিশের ওপর ব্যাপক নজরদারি এবং আইনী কার্যক্রম চলছে।
গ্রেপ্তারের এই নির্দেশের পর পুলিশের অভ্যন্তরে একটি ধাক্কা সৃষ্টি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও এই ঘটনার বিষয়ে পুলিশ বাহিনীর পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি পাওয়া যায়নি, তবে সাধারণভাবে এই ধরনের ঘটনা পুলিশের অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা এবং নেতৃত্বের ওপর প্রভাব ফেলে। গ্রেপ্তারের অনুমতি পাওয়ার পর অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদেরকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেওয়া নির্দেশনার পর এই চার কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারের জন্য সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে। একই সঙ্গে, তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত অব্যাহত থাকবে এবং তদন্তের অগ্রগতির ওপর ভিত্তি করে মামলার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তদন্তের প্রক্রিয়ার অগ্রগতি সম্পর্কে নিয়মিত প্রতিবেদন চেয়েছে, যা এই প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করবে।
জালিম সরকারের সিন্ডিকেট এখনও চলছে, তা ভাঙা সম্ভব হয়নি: জামায়াতের আমির ডাঃ শফিকুর রহমান
এই ধরনের গ্রেপ্তার প্রক্রিয়া পুলিশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে। এটা প্রমাণ করে যে, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর ভেতরে শৃঙ্খলা রক্ষায় কোনো ধরনের ব্যতিক্রমী আচরণ সহ্য করা হবে না।