ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে পালানোর সময় সাবেক ভূমি মন্ত্রী ও খুলনা-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নারায়ণ চন্দ্র চন্দসহ চারজনকে আটক করেছে বিজিবি। রোববার রাতে মহেশপুর উপজেলার শ্রীনাথপুর সীমান্ত থেকে তাদের আটক করা হয়। আটককৃতদের মধ্যে একজন নারীও ছিলেন। মহেশপুর ৫৮ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল শাহ মো. আজিজুস শহীদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে মহেশপুর সীমান্তের শ্রীনাথপুর এলাকা দিয়ে সাবেক ভূমি মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ এবং তার সঙ্গীরা অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করছিলেন বলে জানা যায়। বিজিবি তাদের গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে আটক করে। আটককৃতদের মধ্যে একজন নারীও ছিলেন, তবে তার পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।
সাবেক ভূমি মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দকে সোমবার সকালে মহেশপুর থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। তবে এ সময় বিজিবি তাদের বিরুদ্ধে কী ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছে তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তারা অবৈধ পথে ভারতে পালানোর চেষ্টা করছিলেন।
বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের মহেশপুর এলাকা দীর্ঘদিন ধরে চোরাচালান, অবৈধ অনুপ্রবেশ, এবং অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য পরিচিত। বিজিবি (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) নিয়মিতভাবে এই ধরনের অবৈধ কার্যক্রম রোধে অভিযান চালিয়ে থাকে। বিজিবি এ ধরনের অপরাধ দমনে শক্ত অবস্থান গ্রহণ করে এবং সীমান্তে নজরদারি বাড়িয়ে দিয়েছে। এ কারণে অনেকেই সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে পালানোর চেষ্টা করলেও সফল হয় না।
মহেশপুর সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালানোর সময় বিজিবি’র হাতে আটক সাবেক ভুমিমন্ত্রীকে আদালতে সোপর্দ
মহেশপুর সীমান্ত দিয়ে বিশেষ করে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের এই ধরনের অবৈধ পালানোর চেষ্টা সাম্প্রতিককালে আলোচিত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাবেক ভূমি মন্ত্রীর মতো একজন প্রভাবশালী ব্যক্তির এ ধরনের ঘটনায় বিজিবির নজরদারির গুরুত্ব ও দক্ষতা প্রমাণিত হয়। সীমান্ত রক্ষী বাহিনী দেশের সুরক্ষা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বিশেষ ভূমিকা পালন করছে।
ভারতে পালানোর সময় সাবেক এমপি ফজলে করিম আটক
নারায়ণ চন্দ্র চন্দ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একজন প্রবীণ রাজনীতিবিদ এবং খুলনা-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। তিনি ২০১৪ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ভূমি মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। তার রাজনৈতিক জীবন দীর্ঘ এবং তিনি একজন প্রভাবশালী নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে, যা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে বেশ আলোচনা ছিল। তার এ ধরনের কার্যক্রম এবং সীমান্ত দিয়ে পালানোর চেষ্টা তাকে রাজনৈতিকভাবে আরও সংকটে ফেলতে পারে।
নারায়ণ চন্দ্র চন্দের অবৈধভাবে ভারতে পালানোর চেষ্টার পেছনে কয়েকটি কারণ থাকতে পারে। রাজনৈতিক সংকট, ব্যক্তিগত নিরাপত্তার আশঙ্কা, অথবা দুর্নীতি এবং অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ থেকে বাঁচার জন্যই হয়তো তিনি সীমান্ত পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশে দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত নেতাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া জোরদার হয়েছে, যার ফলে অনেকেই পালানোর চেষ্টা করছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জ ডট শপের মাধ্যমে ৩৫৮ কোটি টাকা পাচার
নারায়ণ চন্দ্র চন্দের বিরুদ্ধে ঠিক কী ধরনের অভিযোগ রয়েছে তা এখনো স্পষ্টভাবে জানা যায়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতি এবং অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে, যা তাকে আইনের মুখোমুখি করেছে।
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর অবস্থানের কারণে অনেক প্রভাবশালী নেতা ও ব্যক্তিত্বের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে ক্ষমতাসীন দলের অনেক নেতাও অভিযুক্ত হচ্ছেন এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
এ ধরনের রাজনৈতিক পটভূমির মধ্যে নারায়ণ চন্দ্র চন্দের পালানোর চেষ্টার ঘটনা রাজনৈতিক মহলে উত্তেজনা তৈরি করেছে। দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর কঠোর নজরদারির কারণে পালানোর এ ধরনের প্রচেষ্টা সফল হয়নি।
নোটিফিকেশনে অ্যান্ড্রয়েডের নতুন সুবিধার কথা জানাচ্ছে গুগল
নারায়ণ চন্দ্র চন্দের এ ধরনের পালানোর চেষ্টা দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি বড় আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। একজন সাবেক মন্ত্রীর সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে পালানোর চেষ্টা তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে এবং তাকে আইনের মুখোমুখি হতে হতে হবে। বিজিবি এই ধরনের কার্যক্রমের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করছে, যা দেশের সুরক্ষা এবং নিরাপত্তা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।