ঝিনাইদহ ইটভাটা মালিক সমিতির বার্ষিক সাধারণ সভা ও নতুন কমিটি গঠন অনুষ্ঠানে এমএ মজিদ সভাপতি এবং রুহুল কুদ্দুস সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। বুধবার দুপুরে শহরের জোহান ড্রীম ভ্যালী পার্ক মিলনায়তনে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ইটভাটা মালিক সমিতির বর্তমান কার্যক্রম এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়।
সভায় বক্তারা ইটভাটা মালিকদের বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন। বিশেষ করে তারা কয়লা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ব্যবসায়িক কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি, অযথা হয়রানি এবং লাইসেন্স প্রাপ্তি ও নবায়নে জটিলতার বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেন। তারা এ সকল সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
ঝিনাইদহ চেম্বার অব কমার্স এর নব-নির্বাচিত কমিটির নিকট দায়িত্ব হস্তান্তর
বক্তারা বলেন, “বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে কাজ করতে হবে। ইটভাটা শিল্প দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, তাই এই খাতকে সুরক্ষা দিতে হবে।” এছাড়াও ইটভাটা মালিকদের জন্য সহজতর ব্যবসায়িক পরিবেশ নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন তারা।
এই সাধারণ সভায় উপস্থিত ছিলেন ইটভাটা মালিক সমিতির সহ-সভাপতি রহুল কুদ্দুস, মোয়াজ্জেম হোসেন, খলিলুর রহমান, উসমান আলীসহ আরও অনেকেই। তারা তাদের বক্তব্যে ইটভাটা মালিকদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান এবং সংগঠনের উন্নয়নে সক্রিয় ভূমিকা পালনের জন্য সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান।
ঝিনাইদহের শৈলকুপায় নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় প্রতিপক্ষের বাড়িঘরে হামলা-ভাংচুর, লুটপাট
সভার শেষে নতুন কমিটি গঠন করা হয়। সকলের সম্মতিক্রমে এ্যাডভোকেট এমএ মজিদকে সভাপতি এবং রুহুল কুদ্দুসকে সাধারণ সম্পাদক করে ৩১ সদস্য বিশিষ্ট নতুন কমিটি গঠন করা হয়। নতুন কমিটির অন্যান্য সদস্যদের নাম ও দায়িত্ব সভায় ঘোষণা করা হয়। নতুন কমিটি আগামী এক বছর দায়িত্ব পালন করবে এবং ইটভাটা মালিকদের স্বার্থ রক্ষা ও উন্নয়নের জন্য কাজ করবে।
ঝিনাইদহ ইটভাটা মালিক সমিতির বার্ষিক সাধারণ সভায় পরিবেশ ও ব্যবসায়িক বিষয়ক বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়। বর্তমান পরিস্থিতিতে ইটভাটা মালিকদের কী কী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হচ্ছে এবং কীভাবে সেগুলোর সমাধান করা যায়, সে বিষয়েও আলোচনা করা হয়। এছাড়া ইটভাটা শিল্পের টেকসই উন্নয়নের জন্য আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার ও পরিবেশবান্ধব উৎপাদন প্রক্রিয়া নিয়ে কাজ করার আহ্বান জানানো হয়।
ঝিনাইদহের শৈলকুপায় নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা বন্ধ ও বাড়ি ফেরার দাবীতে মানববন্ধন
সভায় আরও জানানো হয় যে, ইটভাটা মালিকদের একটি কেন্দ্রীয় ডেটাবেজ তৈরি করার উদ্যোগ নেওয়া হবে, যেখানে প্রতিটি ইটভাটার তথ্য সংরক্ষণ করা হবে। এই ডেটাবেজের মাধ্যমে ইটভাটার অবস্থান, উৎপাদন ক্ষমতা, শ্রমিক সংখ্যা এবং অন্যান্য তথ্য সংগ্রহ করা হবে। এর ফলে ইটভাটা মালিকদের সঠিক পরিসংখ্যান ও তথ্যভিত্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা করবে।
এছাড়া নতুন কমিটি ইটভাটা মালিকদের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানের জন্য একটি অভিযোগ কেন্দ্র চালু করার ঘোষণা দেয়। এই অভিযোগ কেন্দ্রের মাধ্যমে ইটভাটা মালিকরা তাদের সমস্যা ও অভিযোগ সহজেই জানাতে পারবেন এবং সেগুলো সমাধানে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযোগ কেন্দ্রটি ২৪/৭ চালু থাকবে এবং সেখানে নিয়মিত পর্যালোচনা ও রিপোর্টিং করা হবে।
কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের নব-নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের বরণ অনুষ্ঠান
কমিটির নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তার বক্তব্যে বলেন, “ইটভাটা মালিকদের জন্য আমরা সর্বদা পাশে থাকব। ব্যবসায়িক কার্যক্রমের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে এবং ইটভাটা শিল্পের উন্নয়নে আমরা কাজ করব।”
তিনি আরও জানান, “ইটভাটা মালিক সমিতি একটি শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম। সকল সদস্যদের সহযোগিতা ও সংহতির মাধ্যমে আমরা ইটভাটা ব্যবসায়ে সমস্ত সমস্যার সমাধান করব। সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করে আমরা এই খাতের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করব।”
সভায় আরও আলোচনা হয়, ইটভাটা শিল্পকে আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব করতে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার, দক্ষ শ্রমিক নিয়োগ এবং ইটভাটার উন্নয়নে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম গ্রহণের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। বক্তারা বলেন, “ইটভাটা শিল্পে নতুন প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন আনতে হবে। পরিবেশের ক্ষতি না করে কীভাবে অধিক উৎপাদন সম্ভব, তা নিয়ে কাজ করতে হবে।”
সভায় উপস্থিত সকল সদস্যই এই উদ্যোগগুলোকে স্বাগত জানিয়ে তাদের সমর্থন জানান এবং নতুন কমিটির নেতৃত্বে ইটভাটা মালিক সমিতি আরও সুসংগঠিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
শৈলকুপায় পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থীর বাড়িঘরে হামলা-ভাংচুর
সর্বশেষে, ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি এমএ মজিদ তার বক্তব্যে সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “ইটভাটা মালিক সমিতির নতুন কমিটি আপনাদের সেবা ও সমর্থনে সবসময় পাশে থাকবে। আমরা সবাই মিলে ইটভাটা শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যাব।” তিনি আরও বলেন, “আমাদের লক্ষ্য হবে ইটভাটা মালিকদের স্বার্থ রক্ষা, তাদের সমস্যার সমাধান এবং ইটভাটা শিল্পকে একটি টেকসই ভিত্তিতে দাঁড় করানো।”