ঝিনাইদহ প্রতিনিধি–ঝিনাইদহের সদর উপজেলার পাগলা কানাই ইউনিয়নের বাড়ীবাথান গ্রামে একটি জমি দখল ও গাছ কাটার ঘটনার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ অনুযায়ী, একটি ভুমিদস্যু দল জোরপূর্বক জমি দখল করে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কেটে নিয়েছে এবং ফসলও নষ্ট করেছে। এই ঘটনাটি ঘটেছে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে, বাড়ীবাথান গ্রামের দর্গাপাড়া বাজার এলাকায়।
ভুক্তভোগী রফিকুল আলম খালেক, যিনি ঝিনাইদহ পুলিশ লাইন্স স্কুলের অফিস সহকারী এবং কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে কর্মরত, জানিয়েছেন যে তার পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া জমিতে তিনি গত ৫০ বছর ধরে আবাদ করে আসছেন। এই জমির পরিমাণ ৪০ শতক, এবং তিনি এতে বনজ গাছ ও অন্যান্য ফসল ফলিয়েছেন। তবে জমির ওপর প্রতিবেশী শাজাহান মন্ডল ও তার সঙ্গীরা তাদের দাবি তুলে জমিটি জোরপূর্বক দখল করেছে।
রফিকুল আলম জানান, জমিতে থাকা ১০টি গাছ এবং ফসল নষ্ট করে দিয়েছে শাজাহান মন্ডল ও তার দল। তিনি বলেন, “আমরা আমাদের জমিতে শান্তিপূর্ণভাবে আবাদ করছিলাম, কিন্তু তারা জোর করে জমিটি দখল করেছে। এখন আমরা জমিতে গেলে হত্যার হুমকিও দিচ্ছে। এর আগেও তারা জমি নিয়ে মামলা করেছিল, কিন্তু সেই মামলায় তারা হেরে যায়। এবার তারা আবার জোর করে জমি দখলের চেষ্টা করেছে। আমি থানায় অভিযোগ করেছি এবং সুষ্ঠু বিচার চাই।”
ঘটনার পরপরই রফিকুল আলম ঝিনাইদহ সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তিনি তার অভিযোগে উল্লেখ করেছেন যে, শাজাহান মন্ডল এবং তার সহযোগীরা পরিকল্পিতভাবে জমি দখল করেছে এবং তাকে ও তার পরিবারকে বিভিন্নভাবে হয়রানি ও হুমকি দিচ্ছে। এছাড়াও, তারা গাছ কাটার সময় কোনো আইনি অনুমোদন নেয়নি এবং সম্পূর্ণ অবৈধভাবে এই কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেছে।
ঝিনাইদহে অনলাইনে শিক্ষক বদলী জালিয়াতির তদন্ত শুরু ফেঁসে যাচ্ছেন দুই কর্মকর্তাসহ বদলী বানিজ্যের হোতারা
ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি শাহীন উদ্দিন জানিয়েছেন, “আমরা একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি এবং বিষয়টি তদন্তাধীন। আইনানুগভাবে সমস্ত প্রক্রিয়া অনুসরণ করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা তদন্ত শেষ করে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।”
সিলেটে চিনি চোরাচালান চক্রের হোতা ছাত্রলীগের শীর্ষ ৪ নেতা
এ ধরনের জমি দখলের ঘটনা বাংলাদেশে খুবই সাধারণ, বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে। অনেক সময় পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া জমির মালিকানা নিয়ে বিরোধ দেখা দেয়, যা একপর্যায়ে জোরপূর্বক দখলে পরিণত হয়। এই ঘটনাটিও তেমনি একটি জমি সংক্রান্ত বিরোধের অংশ বলে ধারণা করা হচ্ছে। রফিকুল আলমের দাবি অনুযায়ী, জমিটি তার পৈত্রিক সম্পত্তি এবং তিনি নিয়মিত সেখানে চাষাবাদ করছিলেন। তবে, প্রতিবেশী শাজাহান মন্ডলও জমিটির ওপর তাদের দাবি করেছে।
রফিকুল আলম আরও জানিয়েছেন, জমিটি নিয়ে এর আগেও আদালতে মামলা হয়েছিল। সেই মামলায় রফিকুল আলমের পক্ষে রায় আসে এবং শাজাহান মন্ডল মামলায় হেরে যান। তবে মামলায় পরাজিত হওয়ার পরেও শাজাহান মন্ডল জমিটি দখল করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এই ঘটনার পর স্থানীয়রা বেশ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। তাদের মতে, জমি দখল এবং গাছ কেটে নেওয়া একপ্রকার সামাজিক অপরাধ এবং এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। অনেকেই মনে করেন, এ ধরনের ঘটনা বন্ধ করতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
স্থানীয় একজন বাসিন্দা, যিনি নাম প্রকাশ করতে চাননি, বলেছেন, “এ ধরনের ঘটনা আমাদের গ্রামে আগে কখনও ঘটেনি। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করতে চাই, কিন্তু এভাবে জমি দখল করে নেওয়া এবং গাছ কেটে নেওয়া আমাদের গ্রামের সামাজিক ঐক্যকে ক্ষুণ্ণ করছে।”
মনিরুল গণভবন থেকে প্রায় ২৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করেন, যা ছাত্র আন্দোলন দমাতে
জমি দখলের পাশাপাশি গাছ কেটে নেওয়ার ঘটনাটিও গুরুতরভাবে পরিবেশগত প্রভাব ফেলতে পারে। গাছ কাটা শুধু জমির মালিকানার প্রশ্ন নয়, এটি পরিবেশের ওপরও প্রভাব ফেলে। বনজ গাছগুলো স্থানীয় পরিবেশকে সুরক্ষিত রাখতে সহায়তা করে এবং জোরপূর্বক কেটে ফেলা পরিবেশের ক্ষতি করে।
এখন পর্যন্ত স্থানীয় পুলিশ অভিযোগ গ্রহণ করেছে এবং তদন্ত চলছে। জমি সংক্রান্ত মামলাগুলো সাধারণত দীর্ঘ সময় ধরে চলে এবং অনেক সময় প্রকৃত মালিককে জমি ফিরে পেতে আইনি প্রক্রিয়ার মুখোমুখি হতে হয়। বর্তমান পরিস্থিতিতে, রফিকুল আলম এবং তার পরিবার সুষ্ঠু বিচারের অপেক্ষায় আছেন এবং আশাবাদী যে পুলিশ এবং প্রশাসন তাদের পাশে দাঁড়াবে।
বোন সহকারী জজ, প্রতিবেশীদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে জমি দখলের অভিযোগ
ঝিনাইদহের এই জমি দখল ও গাছ কাটার ঘটনা একটি গুরুতর সামাজিক ও আইনি সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে। ভুক্তভোগীরা ন্যায়বিচার পাওয়ার আশায় আছেন এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে সরব হয়েছেন।