ঝিনাইদহ চক্ষু হাসপাতাল ও অন্ধ পুনর্বাসন কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক মিলন হোসেনের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। হাসপাতালের ৮০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে ধরে লিখিতভাবে সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালকের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তবে, এই অভিযোগ দায়েরের পর ১২ দিন পেরিয়ে গেলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, যা হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।
ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলায় র্যাব-৬-এর অভিযানে এক অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী গ্রেফতার
হাসপাতালের কর্মীদের অভিযোগ অনুসারে, মিলন হোসেন ১৯৯৯ সালে হিসাব রক্ষক হিসেবে যোগদান করেন এবং ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলার মাধ্যমে একাধিকবার পদোন্নতি লাভ করেন। বর্তমানে তিনি সহকারী পরিচালক পদে রয়েছেন। কর্মীদের মতে, মিলন হোসেন চশমা ক্রয়, সাইনবোর্ড নির্মাণ, মোটরসাইকেলের শেড নির্মাণ, ঔষধ ও লেন্স ক্রয়সহ বিভিন্ন খাতে ব্যাপক দুর্নীতি করেছেন।
এছাড়াও, তিনি অফিসে যথাসময়ে উপস্থিত থাকেন না এবং কর্মচারীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তিনি অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনের নাম করে প্রতি মাসে ২,৫০০ টাকা গ্রহণ করতেন এবং তার আত্মীয়-স্বজনদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেওয়ার অভিযোগও করা হয়েছে।
বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার ছাত্রদল নেতা মীর্জা ও শিবির সভাপতি পারভেজ
হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট সার্জন ডা. মোঃ আব্দুল হালিম অভিযোগ করেন যে, মিলন হোসেন জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগসাজশ করে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে জনবল নিয়োগ দিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, “আমরা অনেকেই পদোন্নতি পাইনি, অথচ মিলন হোসেন নিজের পদোন্নতি নিশ্চিত করেছেন। আমরা তার বিরুদ্ধে সঠিক তদন্ত এবং দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা চাই।”
সিনিয়র ল্যাব সহকারী তরিকুল ইসলাম উল্লেখ করেন, “মিলন হোসেনের দুর্নীতি ধরা পড়ার কারণে পূর্বে দুইজন কর্মচারীকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। এতদিন তার ভয়ে আমরা মুখ খুলতে পারিনি। এখন আমরা ৮০ জন মিলে অভিযোগ করেছি এবং এর সুনির্দিষ্ট প্রমাণ আমাদের কাছে রয়েছে। তবে অদৃশ্য কারণে এখনো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।”
ঝিনাইদহে জামায়াত কর্মী হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা
হাসপাতালের সাধারণ সম্পাদক এবং সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালককে নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে যে, তারা কেন এই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করছে না। কর্মীরা চায়, তাদের দেওয়া অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত করা হোক এবং প্রমাণ সাপেক্ষে মিলন হোসেনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
অভিযোগের বিষয়ে মিলন হোসেন বলেন, “আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই। এটি আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।”
সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আব্দুল কাদের জানান, “বর্তমান জেলা প্রশাসক হাসপাতালে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন না। তাই, তদন্ত কমিটি গঠন বা ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। নতুন জেলা প্রশাসক আসার পরই অভিযোগের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঝিনাইদহে এক কৃষককে জবাই করে হত্যা
এই ঘটনাটি হাসপাতালে দুর্নীতির সম্ভাব্য বিষয়গুলো নিয়ে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ থাকার পরেও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়া সমাজসেবা খাতের নৈতিকতা এবং সততার ওপর প্রশ্ন তুলেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত অবিলম্বে অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা, যাতে হাসপাতালের সুষ্ঠু পরিচালনা ও জনসাধারণের বিশ্বাস রক্ষা করা যায়।